মৌলভীবাজারে রেস্তোরাঁয় ঢুকে বিএনপি নেতাদের ওপর হামলা-ভাঙচুর
মৌলভীবাজার রেস্তোরাঁয় ঢুকে বিএনপি নেতাদের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের শাহ মোস্তফা সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি নাসের রহমান দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলীয় মেয়র পদপ্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে অংশ নেয়। দুপুর আড়াইটার দিকে শহরের সুলতানপুর এলাকায় গণসংযোগ শেষে নাসের রহমান চলে যান। এরপর বেলা ৩টার দিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি মিজানুর রহমান, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মতিন বক্স, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক জিএম মুক্তাদির রাজুসহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী গণসংযোগ শেষে শাহ মোস্তফা সড়কে অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চুর মালিকানাধীন ইসমাইল হোটেলে অবস্থান করছিলেন।
সেখানে তারা নির্বাচন কেন্দ্রিক দলীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একে অন্যের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এক পর্যায়ে নৌকার সমর্থকরা শতাধিক মোটরসাইকেলে করে হোটেলে অবস্থানরত বিএনপি নেতাদের ওপর লাটিসোটা দিয়ে অতর্কিত হামলা এবং রেস্তোরাঁয় ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় বিএনপি নেতারা হামলা থেকে বাঁচতে দৌড়ে পালিয়ে যান।
হামলার ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আক্তার হোসেন। এ সময় তাঁকে হামলাকারীদের নিবৃত করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘নৌকা এবং ধানের শীষের সমর্থকদের মধ্যে ঘটনা ঘটেছে। তবে কী কারণে ঘটনার সূত্রপাত তা জানতে চেষ্টা করছি, পরবর্তীতে জানাতে পারব ঘটনার প্রকৃত কারণ।’
ঘটনাস্থলে কথা হয় ব্যাপক ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত ইসমাইল হোটেলের কর্মচারি জাকির হোসেনের সঙ্গে। এ সময় তিনি জানান, কিছু বুঝে উঠার আগেই হঠাৎ হামলার ঘটনায় হতভম্ভ হয়ে যাই। কোনো রকম প্রাণ বাঁচাতে পেছন থেকে পালিয়ে যাই। কী কারণে হামলা সে বিষয়ে হোটেল কর্মচারী জাকির কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
বিষয়টি নিয়ে নাসের রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই ঘটনা মৌলভীবাজারের রাজনৈতিক ইতিহাসে কখনো ঘটেনি। সিনিয়র নেতাদের ওপর পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারদলীয় লোকজন যে হামলার ঘটনাও অতীতে ঘটেনি। এ ঘটনায় হোটেলে অবস্থানরত জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিন বক্সসহ পাঁচ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় আরও অনেক সিনিয়র নেতাদের লাঞ্ছিত করা হয়। তিনি বলেন, ‘আমি গণসংযোগ থেকে চলে আসার কিছুক্ষণ পরই আমাদের সিনিয়র নেতাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।’
এর আগে হামলাকারীরা আমাদের প্রচারণার ওপর নজরদারি চালায় জানিয়ে নাসের রহমান বলেন, ‘মূলত ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে না আসে সে কারণেই এমন ঘটনা ইচ্ছাকৃতভাবে আওয়ামী লীগ ঘটিয়েছে।’
এদিকে, নেতাদের ওপর হামলার বিষয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে জেলা বিএনপির জরুরি বৈঠক ডেকেছেন নাসের রহমান। আজ বুধবার সন্ধ্যায় জরুরি এক সভায় বসেন বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করা হয় বলে জানান।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘মৌলভীবাজারের মানুষ খুব শান্তিপ্রিয়। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা থাকেই। আজকের ঘটনা খুব বড় না হলেও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে যাতে কোনো প্রভাব না পরে পুলিশ সে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।
পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি দলীয় মেয়র পদপ্রার্থী অলিউর রহমানের পক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগ শেষে দলীয় নেতারা হোটেলে বসে চা খাওয়া অবস্থায় অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে।’