মৌলভীবাজারে চিকিৎসকসহ আরো ২৪ জনের করোনা শনাক্ত, পরীক্ষায় ধীরগতি
মৌলভীবাজারে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই মধ্যে চিকিৎসক ও সেবিকাসহ নতুন করে আরো ২৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২১৫ জনে।
এদিকে, ধীরগতিতে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা হওয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে করোনা আরো ছড়িয়ে পড়ছে বলে প্রশ্ন উঠেছে। এ ছাড়া, পিসিআর ল্যাবে নমুনা পাঠানোর পর এখনো অন্তত ৮০০ রিপোর্ট অপেক্ষমান রয়েছে বলে জানা গেছে।
সিভিল সার্জন সূত্রে আজ মঙ্গলবার দুপুরে জানা গেছে, নতুন আক্রান্ত ২৪ জনের মধ্যে কুলাউড়া উপজেলার ১৩ জন, সদর উপজেলার পাঁচজন, রাজনগর উপজেলার তিনজন, বড়লেখা উপজেলার দুজন ও কমলগঞ্জ উপজেলার একজন রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক করোনা আক্রান্ত রোগী জানান, জ্বর- কাশি ও শ্বাসকষ্ট থাকায় গত ১৯ মে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নমুনা দেন তিনি। পরে গত ২৫ মে রিপোর্ট পজিটিভ জানতে পেরে হোম আইসোলেশনে যান এবং বাসায় চিকিৎসা নেন। পরে গত ৭ ও ৯ জুন পরীক্ষার জন্য দুবার নমুনা দেন তিনি। আজ মঙ্গলবার তিনি জানতে পারেন, রিপোর্টে করোনা নেগেটিভ এসেছে।
করোনায় আক্রান্ত হওয়া ওই ব্যক্তি আরো জানান, উপসর্গ থাকার পরও গত ১৯ মে থেকে ২৪ মে রাত পর্যন্ত স্বাভাবিক চলাফেরা ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে যান তিনি।
করোনায় আক্রান্ত হওয়া শমসের নগর ও কুলাউড়ার দুই ব্যক্তির ক্ষেত্রেও একই বিষয় জানা যায়। তাঁরা নমুনা দেওয়ার পর স্বাভাবিক চলাফেরা করেন। রিপোর্ট আসতেও বিলম্ব হয়। এতে করে প্রতিদিন আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েই পড়ছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. তাওহীদ আহমদ বলেন, ‘আমরা নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠালে চার থেকে আট দিন পর্যন্ত সময় লেগে যায়। আমাদের এখান থেকে ঢাকা ও সিলেট পিসিআর ল্যাবে পাঠানোর পর অপেক্ষমাণ রয়েছে আরো প্রায় ৮০০ রিপোর্ট। পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষার গতি না বাড়লে যতই নমুনা সংগ্রহ করে পাঠাই না কেন, করোনা পরীক্ষায় রিপোর্ট দ্রুত পাওয়া যাবে না।’
এদিকে, মৌলভীবাজারে করোনা সংক্রমণের হার বিবেচনা করে কিছু এলাকা রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার কালিঘাট রোড, মিশন রোড, রূপসপুর, সবুজভাগ, মুসলিমবাগ, লালবাগ, বিরাইমপুর ও সদর ইউনিয়নের কিছু অংশ রেডজোনে পড়েছে। এ ছাড়া, কুলাউড়া পৌরসভার মাগুরা-মনসুর, নন্দনগর এলাকা রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
মৌলভীবাজারে এখন পর্যন্ত মোট ২১৫ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। এ ছাড়া সুস্থ হয়েছে ৮৫ জন। অন্যদিকে, করোনার উপসর্গ নিয়ে মোট ২৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।