মুজিববর্ষে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আসবে দেশ : প্রধানমন্ত্রী
মুজিববর্ষের (২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মার্চ) মধ্যে দেশের প্রতিটি ঘরে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা মুজিববর্ষের মধ্যে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ, কেউ অন্ধকারে থাকবে না। সব ঘরেই আলো জ্বলবে।’
আজ বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ২৩ উপজেলার শতভাগ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন। বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়াও বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণও গুরুত্বপূর্ণ এবং সরকার সে জন্যও বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তাবায়ন করছে।
বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণকে কম দামে বিদ্যুৎ দেওয়ার জন্য সরকার এ খাতে ব্যাপক ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে।
তৃণমূলের জনগণও যাতে উন্নয়নের ফল পায়, এ লক্ষ্যেই সরকার সব উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘আমরা বিষয়টি লক্ষ রেখে আমাদের সব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। তার মানে আমরা শুধু শহরাঞ্চলে বা রাজধানীতে উন্নয়ন করতে চাই না, আমরা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চাই,’ যোগ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার গ্রামীণ অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার বিকাশে, কর্মসংস্থানে এবং স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে চায়।
উদ্বোধিত সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র হলো—আনোয়ারায় ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, রংপুরে ১১৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলীতে ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিকলবহা ১০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, পটিয়ায় ৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, তেঁতুলিয়ায় ৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং গাজীপুরে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র।
নতুন এ সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে থেকে ৭৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হওয়ায় আজ থেকে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২২ হাজার ২৬২ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের ৯৪ শতাংশের বেশি জনগণ বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় এলো।
শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতার ২৩ উপজেলা হলো—বগুড়ার গাবতলী, শেরপুর ও শিবগঞ্জ, চট্টগ্রামের লোহাগড়া, ফরিদপুরের মধুখালী, নগরকান্দা ও সালথা, গাইবান্ধার ফুলছড়ি, গাইবান্ধা সদর ও পলাশবাড়ী, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর ও নবীগঞ্জ, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ও মহেশপুর, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ, নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম, লালপুর ও সিংড়া, নেত্রকোনার বারহাট্টা ও মোহনগঞ্জ এবং পিরোজপুর জেলার ভাণ্ডারিয়া, কাউখালি ও ইন্দুরকানী।
সারা দেশকে শতাভাগ বিদ্যুতায়নে নিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াটে নিতে ব্যাপক কর্মসূচির বাস্তবায়ন করছে।