মালয়েশিয়া থেকে ফিরে জ্বর-সর্দি, এরপর গেলেন আটরশি
করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে পাবনার সুজানগর উপজেলার এক মালয়েশিয়াপ্রবাসীকে ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে। সেইসঙ্গে তাঁর পরিবারের ১৪ সদস্যকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
ওই প্রবাসীর নাম মিরাজ হোসেন (৩২)। তিনি সুজানগরের সাগরকান্দী ইউনিয়নের হুগলাডাঙ্গী গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে। গতকাল বুধবার বিকেলে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
হাবিবুর রহমান জানান, মিরাজ ১১ দিন আগে মালয়েশিয়া থেকে বাড়িতে আসেন। তিন দিন আগে তিনি জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হন এবং ওই অবস্থায় ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আটরশিতে যান। এরপর বাড়ি ফিরে আসেন। গত মঙ্গলবার এলাকাবাসীর মাধ্যমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ খবর পেয়ে একটি মেডিকেল টিম নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান এবং এ বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করেন। এ সময় পরিবারের সদস্যরা স্বীকার করেন, মিরাজ তিন দিন ধরে হালকা জ্বর-সর্দিতে ভুগছেন। মেডিকেল টিম বাড়িতে থাকাবস্থায় মিরাজের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে পরীক্ষার জন্য তাঁকে ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। সেইসঙ্গে তাঁর পরিবারের ১৪ সদস্যকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখে।
এদিকে, করোনাভাইরাসে ঝুঁকি এড়াতে পাবনায় অন্তত ৩৮ জন বিদেশফেরত ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। হোম কোয়ারেন্টিনের শর্ত মেনে টানা ১৪ দিন নিজ বাড়িতে থাকতে তাঁদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব শর্ত মানতে তাঁদের বাধ্য করতে বুধবার কঠোর নজরদারি শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
শর্ত ভঙ্গ করে বাইরে ঘোরাঘুরি করায় সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নে মালয়েশিয়াফেরত এক প্রবাসী যুবককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবাল জানান, করোনাভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে পাবনায় স্বাস্থ্য বিভাগ সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করেছে। করোনা আক্রান্ত দেশ কিংবা বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত ৩৮ প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
এদিকে, হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা বিদেশফেরত অনেক ব্যক্তিই শর্ত ভেঙে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ফলে কোয়ারেন্টিনের শর্ত মানতে বাধ্য করতে বিদেশফেরতদের বাড়ি বাড়ি নজরদারি শুরু করেছে জেলা প্রশাসনের দল।
পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন জানান, সদর উপজেলায় অন্তত ২০ জন বিদেশফেরত ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদারকি করতে বুধবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের দুটি পৃথক দল কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেয়। এ সময় দাপুনিয়া ইউনিয়নে বাঙগাড়ি গ্রামে ফিরোজ আহমেদ নামের মালয়েশিয়াফেরত এক যুবককে শর্ত ভঙ্গ করে বাজারে ঘোরাঘুরি করতে দেখায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জয়নাল আবেদীন আরো জানান, করোনা ঝুঁকি মোকাবিলায় হোম কোয়ারেন্টিনের শর্ত মানতে বাধ্য করতে জেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।