মালচিং পদ্ধতিতে টমেটোর চাষে নজরুলের সাফল্য
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মালচিং পদ্ধতিতে টমেটোর চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন কৃষক মো. নজরুল ইসলাম। এই পদ্ধতি এলাকায় জনপ্রিয় হলে উৎপাদন বৃদ্ধিসহ কৃষকরা বেশ লাভবান হবেন বলে আশাবাদ কৃষি বিভাগের।
কৃষি বিভাগ জানায়, জমিকে উত্তমরূপে তৈরি করে প্রয়োজনীয় জৈব ও রাসায়নিক সার মিশিয়ে বেড তৈরি করে সেখানে বীজ বপন করতে হয়। তারপর সে বেডগুলো মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। মালচিং পেপার হলো বিশেষ ধরনের পলিপেপার (পলিথিন)। বীজগুলো থেকে চারা গজানোর পর চারার স্থানগুলো থেকে মালচিং পেপার ছিঁড়ে দিতে হয়। যাতে করে চারাগুলো মাথা তুলে বড় হতে পারে।
এই মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে জমিতে আগাছা জন্মাতে পারে না। সেচের অতিরিক্ত পানি জমে জমি বিনষ্ট হয় না। অতিরিক্ত সারের প্রয়োজন হয় না। ফলে জমি চাষাবাদে শ্রম কমে যাওয়ায় শ্রমিক কম লাগে। উৎপাদন খরচ কমে যায়। জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলন অনেক বেশি হয়। গাছের আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ায় দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এতে করে কৃষক সবদিক থেকে লাভবান হয়।
ভৈরবের কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের মিরারচর এলাকার কৃষক মো. নজরুল ইসলাম প্রথমবারের মতো এই মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। তিনি জানান, দেড় বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে টমেটোর চাষাবাদে তাঁর সর্বমোট খরচ হয়েছে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। জমিতে যেভাবে ফলন এসেছে, এতে করে তিনি কমপক্ষে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারবেন বলে ধারণা তাঁর।
নজরুল ইসলাম আরও জানান, প্রথমবারের সফলতায় তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আগামী মৌসুমে ১০ বিঘা জমিতে এই পদ্ধতিতে টমেটোর আবাদ করবেন। তিনি তাঁর মতো করে অন্য কৃষকদেরও আহ্বান জানান এ পদ্ধতিতে টমেটোর চাষ করতে। আর সেই ক্ষেত্রে তিনি কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন বলেও জানান।
তাঁদের প্রয়োজনীয় পরামর্শে কৃষক নজরুল ইসলাম মালচিং পদ্ধতিতে টমেটোর আবাদ করে বেশ লাভবান হয়েছেন দাবি করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা চন্দন কুমার সাহু। তিনি জানান, এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে অল্প শ্রম আর খরচে অনেক বেশি লাভ হয়। তিনি আশা করেন আগামীতে এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ বৃদ্ধি পাবে ভৈরবের বিভিন্ন এলাকায়। আর এতে এলাকার সবজির চাহিদা পূরণসহ কৃষকরা লাভবান হবেন।