মামলার হয়রানি থেকে বাঁচতে প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি
মানবপাচারের সিন্ডিকেট ও মামলাবাজদের হাত থেকে বাঁচাতে প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবরের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি বরাবরে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে কমপক্ষে ২০টি ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য মানববন্ধন করে।
গতকাল রোববার স্মারকলিপিতে পরিবারগুলো দাবি করে, এই মামলাবাজ সিন্ডিকেটের দলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসৎ কর্মকর্তা, নিম্ন ও উচ্চ আদালতের গুটিকয়েক কর্মচারী এবং বেশকিছু অসাধু আইনজীবী জড়িত। ভুক্তভোগীরা বলেন, সাজানো মানবপাচারের অভিযোগগুলোর ধরন ও গল্প ঘুরেফিরে একই। একটি মামলায় জামিন হলে পুরোনো আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এসব মামলা থেকে রেহাই পেতে প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ চান তাঁরা।
স্মারকলিপিতে প্রধান বিচারপতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ‘আমরাও প্রচলিত আইনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, একটি ঠকবাজ প্রতারক চক্র সেই আইনকে চরমভাবে বেআইনি কাজের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। যার শিকার আমাদের পরিবার। এই দুষ্টচক্রের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব শিশু, বৃদ্ধ, যুবক, নারী ও পুরুষ। এমন এক জালে বন্দি আমরা, যে জাল আমাদের একার পক্ষে ছিন্ন করা সম্ভব না।'
‘বিচ্ছিন্নভাবে আমরা একেকজন ভুক্তভোগী। কিন্তু যারা আমাদের দুঃস্বপ্নের একেকটি রাতের জন্য দায়ী তারা অনেক বেশি শক্তিশালী, সংঘবদ্ধ ও প্রাতিষ্ঠানিক। এক-দুই দিন নয়, বছরের পর বছর জেল খাটছে আমাদের স্বজনরা। একটি-দুটি নয়, পাঁচটি-দশটি এমনকি ৫০-৬০টি সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। সময় যতই গড়াচ্ছে মামলার সংখ্যাও চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে। কারা কোথা থেকে কীভাবে মামলা সাজাচ্ছে তা জানা নেই আমাদের। মামলার শিকার মানুষগুলো চিনে না সাজানো বাদীদের।’
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, ‘আবার সাজানো বাদীরাও চিনে না কথিত আসামিদের। মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে দেখেছি একজন এই মামলায় বাদী তো অন্য মামলায় সাক্ষী। এমনও ব্যক্তি আছেন একজনকে ভিকটিম সাজিয়ে পৃথক সব জেলায় ভিন্ন ভিন্ন আসামিদের বিরুদ্ধে সাজানো মানবপাচার মামলা করেছেন। এই চক্রের মূল উদ্দেশ্যই হলো মানবপাচারসহ অন্যান্য মামলার জালে সমাজের নিরীহ সম্মানিত ব্যক্তিদের ফাঁসিয়ে তাদের সহায় সম্পদ, ভিটে-মাটি লুটে নেওয়া।’
প্রধান বিচারপতিকে ভুক্তভোগীরা আরো বলেন, ‘ওরা শুধু মামলা দিয়েই থেমে থাকে না। ভুয়া ওয়ারেন্ট দিয়েও আমাদের স্বজনদের কারাগার থেকে কারাগারে ঘোরায়, যদিও আমার স্বজনদের বিরুদ্ধে এইসব ভুয়া ওয়ারেন্টের কোনো অস্তিত্ব নেই। এরা প্রবল শক্তিশালী। জেনেছি, সব সাজানো মামলা দায়েরের অনুমতি ও নির্দেশনা আসে একটি একক জায়গা থেকে। এও জেনেছি, মামলাবাজ সিন্ডিকেটের মূলহোতা পারিবারিক সম্পত্তি থেকে তার আপন তিনভাইকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমাদের মতো এদের বিরদ্ধেও ৪৮টি করে সাজানো মামলা দিয়েছে।’