মানুষ এখন বিয়েবাড়িতে যায় পেঁয়াজ নিয়ে : আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, মানুষ এখন বিয়েবাড়িতে উপহার হিসেবে পেঁয়াজ নিয়ে যাচ্ছে। পেঁয়াজের দাম এখন ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী পেঁয়াজের ব্যাপারে একটা সমাধান দিয়েছেন। তিনি মানুষকে পেঁয়াজ খেতে মানা করেছেন। কারণ, তাঁর তো মানুষের ভোটের প্রয়োজন নেই। তিনি মানুষকে তোয়াক্কা করেন না।
শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কৃষক দলের বার্ষিক সম্মেলনে এ কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, উত্তর জেলা বিএনপির সহসভাপতি নাজিম উদ্দীন ভিপি ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।
আমীর খসরু বলেন, অনির্বাচিত সরকারকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে যেতে হয় না। তাদের ভোটেরও প্রয়োজন নেই। জবাবদিহি করতে হয় না। তাই নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে তাঁরা সাজেশন দেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে জেল থেকে মুক্ত করতে বাংলাদেশের মানুষ প্রস্তুত। আন্দোলন দিনক্ষণ সময় স্থির করে হয় না। মনের মধ্যে যে আন্দোলনের আগুন জ্বলছে, তা বের করে আনার আহ্বান জানান তিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে কৃষক দলের উদ্যোগে পেঁয়াজের ওপর একটা সেমিনার আয়োজন করতে হবে। ৩০ টাকার পেঁয়াজ ২৫০ টাকা কীভাবে হতে পারে, এটার ইতিহাস মানুষকে জানাতে হবে।
বিশ্বের গণতান্ত্রিক নেতাদের যেভাবে মুক্ত করা হয়েছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকেও সেভাবে মুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, কয়েক দিন আগে দুটি ট্রেন মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। অথচ মন্ত্রী বলছেন, এর পেছনে নাকি নাশকতা আছে। এই মন্ত্রীরা জীবনেও ভোটে নির্বাচিত হননি। এরা জনবিচ্ছিন্ন, এরা ভোট-ডাকাত। মানুষের ভোট কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। খালেদা জিয়াকে জেলে রেখেছে শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য।
সাবেক মন্ত্রী বলেন, শহীদ জিয়া উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছেন, তা অন্য কোনো নেতা পারেননি। তারা ক্যাসিনো উৎপাদন করতে পারে। শেয়ারবাজার লুট করতে পারে। মানুষের শ্রম দিয়ে উৎপাদনের মধ্যে যে আনন্দ, হালাল আয়ের মাধ্যমে একটি দেশ কোথায় যেতে পারে, শহীদ জিয়া তা চিন্তা করেছিলেন। সে জন্য তিনি কৃষক দল গঠন করেছিলেন। নির্বাচিত নতুন কমিটিকে শহীদ জিয়ার সে স্বপ্ন পূরণ করতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন বলেন, দেশে যে অবস্থা চলছে তাতে কেউ শান্তিতে নেই। বর্তমানে কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসলের মূল্য না পেয়ে আগুন দিচ্ছে।
কৃষক দল চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার সভাপতি ইসহাক কাদের চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম লতিফির পরিচালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কৃষক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক এম এ হালিম। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আলহাজ সালাহ উদ্দিন, কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহ বাহার।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন উত্তর জেলা কৃষক দলের কমিটি ঘোষণা করেন। এতে অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম লতিফিকে সভাপতি ও বদিউল আলম বদরুলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।