মানিকগঞ্জে নারী আইনজীবীকে নির্যাতন, শাওন সাত দিনের রিমান্ডে
মানিকগঞ্জে প্রতারণা করে বিয়ের পর নারী আইনজীবীকে নির্যাতন ও সম্পদ আত্মসাতের মামলায় গ্রেপ্তারের পর আসামি শাওনকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মানিকগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হানিফ সরকার বলেন, ‘আজ ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে শাওনকে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়। ৯ নম্বর আদালতের বিচারক জান্নাতুল রাফিন সুলতানা অভিযুক্ত আসামির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’
এর আগে গতকাল বুধবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকা থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের সহযোগিতায় মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামি শাওন মিয়ার প্রকৃত নাম রুবেল মিয়া। তার বাড়ি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।
পরিদর্শক মো. হানিফ সরকার আরো বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত আসামি শাওন ওরফে রুবেল নারী আইনজীবী কামরুন্নাহার সেতুকে প্রতারণা করে বিয়ে এবং তাকে নির্যাতনসহ তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে।’
কোর্ট ইনস্পেক্টর হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, ‘অভিযুক্ত আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবীই আদালতে দাঁড়াননি। সবাই নির্যাতিত নারী আইনজীবীর পক্ষে দাঁড়িয়ে আসামির রিমান্ডের দাবি জানান।’
নির্যাতিত নারী আইনজীবী কামরুন্নাহার সেতু জানান, শাওন ওরফে রুবেল তার সঙ্গে প্রতারণা করে বিয়ে করেন। এরপর নবীনগরের একটি ভাড়া করা কক্ষে রেখে অমানবিক নির্যাতন এবং বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন। ইন্টারনেটে এসব নগ্ন ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা নেন। অবশেষে তার নামে থাকা জমি লিখে দিতে চাপ দেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। গত ২ নভেম্বর দিবাগত রাত ২টার সময় বটি দিয়ে জবাই করতে গেলে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তিনি রক্ষা পান।
সেখান থেকে ফিরে এসে ৪ নভেম্বর রাতে আইনজীবী কামরুন্নাহার সেতু অভিযুক্ত শাওন ওরফে রুবেলের নানা অপকর্মের কথা জানায়।
এর আগে কামরুন্নাহার সেতুর বাবা মো. সফিউদ্দিন গত ৩ নভেম্বর মানিকগঞ্জ থানায় শাওন মিয়া ওরফে রুবেল মিয়ার বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা করেন।
এদিকে, আসামি রুবেলকে আটকের পর তার নানা অপকর্মের খবর আসতে শুরু করেছে। এর আগে তিনি বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছেন। তার প্রতারণার কথা ফাঁস হওয়ার পর আগের সব বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। রুবেল নিজেকে উচ্চশিক্ষিত ও বড় ব্যবসায়ী পরিচয় দিলেও তিনি মূলত একজন প্রতারক। তেমন লেখাপড়া জানেন না। তিনি তার প্রতারণার অংশ হিসেবে মোবাইলে বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন কণ্ঠে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি পরিচয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন বলে জানা গেছে।