মানবাধিকার প্রতিবেদন : ব্রিটেনের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাজ্যের মানবাধিকারবিষয়ক একটি প্রতিবেদন সম্পর্কে অসন্তোষ ব্যক্ত করার জন্য আজ রোববার ঢাকাস্থ ব্রিটিশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে। প্রতিবেদনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অপব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে যে, তিনি এখন ‘গৃহবন্দি’ রয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে যে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা উল্লেখ করতে ‘গৃহবন্দি’ শব্দগুলোর ব্যবহার একটি বড় ধরনের বিভ্রান্তি।”
এতে আরও বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) প্রকাশিত হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসি রিপোর্ট ২০২০-এর বাংলাদেশ অধ্যায়ে উল্লেখিত ইস্যুগুলোর ব্যাপারে সরকারের মনোভাব ও অসন্তোষ ব্যক্ত করার জন্য ব্রিটিশ দূত জাভেদ প্যাটেলকে তলব করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, পররাষ্ট্র দপ্তর দূতকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, (খালেদা জিয়া) তাঁর বাড়িতে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন এবং বিদেশে ভ্রমণ করতে পারবেন না এই শর্তে সরকার ২০২০ সালের মার্চ মাসে তাঁর সাজা স্থগিত করে তাঁকে ‘মুক্তি’ দেয়।
এতে আরও বলা হয়, খালেদা জিয়াকে তাঁর ভাইয়ের একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোডের একটি ধারায় শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, দূতকে আরও অবহিত করা হয়েছে যে, প্রাথমিকভাবে খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তবে, পরবর্তীতে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর ও ২০২১ সালের মার্চ মাসে দুইবার তাঁর মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে যে, এ ধরনের আইনি বিষয়ে যেকোনো ধরনের বিভ্রান্তির ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, পশ্চিম ইউরোপ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন শাখার মহাপরিচালক ফাইয়াজ মুর্শিদ কাজী বৃটিশ দূতকে মন্ত্রণালয়ে তলব করার পর তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে, যুক্তরাজ্য সরকারের যেকোনো দাপ্তরিক তথ্যে বাংলাদেশ সরকার অথবা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দল সম্পর্কে ‘কোনো ধরনের ইঙ্গিতপূর্ণ বা বিভ্রান্তিকর’ তথ্য প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
ঢাকা এই বিবৃতিতে ব্রিটিশ প্রতিবেদনে উল্লেখিত বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের সংখ্যার ব্যাপারেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
প্যাটেল মানবাধিকার ও গভর্নেন্সের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতির মাধ্যমে একটি গঠনমূলক আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশকে একটি ‘পরিপক্কতামুখী গণতন্ত্র’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেনি।
উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা সরকারি নথি বা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা ক্ষেত্রে তথ্যের প্রামাণ্য সূত্রের ব্যবহারের গুরুত্বের ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন।