মাকে দাফন করে ফেরার পথে মেয়ে-নাতনির মৃত্যু
নওগাঁ সদর উপজেলায় ট্রাকের চাপায় মা ও মেয়ে নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ওই পরিবারের গৃহকর্তা ও আরেক মেয়ে আহত হয়েছেন। এ ঘটনার পর স্থানীয়রা নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে প্রায় এক ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আজ সোমবার সকালে উপজেলার ডাক্তারের মোড় বটতলী নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন আদুরী বেগম (২৫) ও তাঁর মেয়ে শম্পা (৬)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আদুরি বেগমের স্বামী শহীদুল ইসলাম ও তাঁদের আরেক মেয়ে পারভীন আক্তার। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নওগাঁ সদর হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের বাড়ি উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়নের ধোপাইপুর গ্রামে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি ফেলে রেখে চালক ও তাঁর সহকারী পালিয়ে যান। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গতকাল রোববার আদুরী বেগমের মা মারা যান। এ খবর শোনার পর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আদুরী বেগম উপজেলার হাপানিয়া উল্লাসপুর গ্রামে বাবার বাড়িতে আসেন।
মায়ের দাফন শেষে আজ সোমবার আদুরী বেগম নিজের বাড়ি ফিরছিলেন। সকাল ৮টায় তাঁরা বাসে ওঠার জন্য ডাক্তারের মোড় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় নওগাঁ থেকে আসা একটি ট্রাক রাস্তার বিপরীত পাশ থেকে আসা একটি পিকআপকে পাশ কাটাতে গিয়ে তাঁদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আদুরী ও তাঁর ছোট মেয়ে শম্পা নিহত হন।
স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় শহীদুল ইসলাম ও শিশুকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক শহীদুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। আর মেয়ে শিমু নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
ডাক্তারের মোড়ের চা-বিক্রেতা আবদুল জব্বার বলেন, ‘তাঁরা আমার দোকানের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় নওগাঁ থেকে আসা একটি খালি ট্রাক বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপভ্যানকে পাশ কাটাতে গিয়ে তাদের গায়ের ওপর উঠে যায়। ঘটনার পর মহাসড়কে বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ ছিল। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা এসে লাশ উদ্ধার করে।
আদুরী বেগমের চাচা মকবুল হোসেন জানান, আদুরীর মা মারা যাওয়ার সংবাদ পেয়ে স্বামীসহ মেয়েদের নিয়ে বাবার বাড়ি এসেছিলেন। আজ তাঁরা বাড়ি ফিরছিলেন।