ভৈরবে দরিদ্র মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে দেড় হাজারের বেশি দরিদ্র মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া বরাদ্দের খাদ্যসামগ্রী উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন ও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুল্লাহ নিয়াজের ব্যক্তিগত অর্থায়নে তাঁর নিজ ওয়ার্ডের মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. সায়দুল্লাহ মিয়া ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা এই বিতরণ কাজের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান রাশেদসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনকালে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ মো. সায়দুল্লাহ মিয়া বলেন, ‘দেশবাসীর এই দুর্যোগে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দ্রুততম সময়ে জনগণের মধ্যে এই ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে আরো বরাদ্দ আসবে। আপনারা শুধু ধৈর্য ধরে সরকারি সিদ্ধান্তটা মেনে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করেন। এই মহামারি থেকে নিজে নিরাপদে থাকুন এবং আপনার পরিবার-পরিজনসহ আশপাশের লোকজনকে নিরাপদ থাকতে সহায়তা করুন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘দরিদ্র কোনো মানুষ না খেয়ে থাকবে না, ইনশাআল্লাহ। সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে যার যার বাড়িতে অবস্থান করুন। বিনা কারণে বাইরে বের হয়ে নিজের এবং অন্যের বিপদের কারণ কেউ যেন না হন।’
এ সময় সরকারি সিদ্ধান্তে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে গিয়ে কর্ম হারিয়েছেন এমন সাড়ে ৭০০ শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে ১০ কেজি চাল, পাঁচ কেজি আলু ও দুই কেজি করে মসুর ডাল বিতরণ করা হয়।
অন্যদিকে, পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার ৮০০ শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে নিজস্ব অর্থায়নে পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি আটা, এক কেজি আলু, এক কেজি পেঁয়াজ ও এক কেজি করে মসুর ডাল বিতরণ করেন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. হাবিবুল্লাহ নিয়াজ। ভৈরব পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফখরুল আলম আক্কাছ এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এ সময় কাউন্সিলর মো. হাবিবুল্লাহ নিয়াজ বলেন, ‘পৌর কাউন্সিলর নয়, আমি মানুষ হিসেবে মানবিক তাড়না থেকে এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। দিনমজুর শ্রেণির মানুষের বাড়তি কোনো সঞ্চয় থাকে না। তাঁরা দিনে আয় করে দিনে খান। এই তিন দিন ধরে কাজ না করতে পেরে তাঁরা অভাবে পড়েছেন। এই উপলব্ধি থেকে আমি তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছি।’
মেয়র অ্যাডভোকেট ফখরুল আলম আক্কাছ বলেন, ‘ধনী-দরিদ্র জনগণ নিয়েই আমাদের সমাজ। বিপদে-আপদে বিত্তশালীরা বিত্তহীনদের পাশে দাঁড়াবেন, এটাই সমাজ ও রাষ্ট্র প্রত্যাশা করে।’