ভৈরবে উচ্চস্বরে মাইক ও রাত ১২টার পর ওয়াজ বন্ধের সিদ্ধান্ত
ধর্মীয়, সামাজিক-সাংস্কৃতিক অথবা পারিবারিক-যেকোনো অনুষ্ঠানে এখন থেকে আর উচ্চস্বরে মাইক বা শব্দযন্ত্র বাজানো যাবে না। ওয়াজ মাহফিল বা ওরশ মোবারক অনুষ্ঠানের মাইকের শব্দের সীমাবদ্ধ থাকবে আয়োজনের প্যান্ডেল পর্যন্ত।
অপরদিকে যেকোনো সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পূজা-পার্বন ও পারিবারিক অনুষ্ঠানের মাইকের সাউন্ডও থাকবে আয়োজনস্থলের মধ্যে। আর এসব অনুষ্ঠানের মাইক বা সাউন্ড চলবে রাত ১২ পর্যন্ত। ওয়াজ মাহফিলে বক্তারা বয়ান করবেন রাত ১২টা পর্যন্ত।
আজ সোমবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা পরিষদ এক সভায় সর্বসম্মতভাবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সভায় স্থানীয় আলেম-ওলামা পরিষদ, ইমাম পরিষদ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপস্থিত অতিথিরা তাদের বক্তব্যে বলেন, ধর্মীয়, সামাজিকসহ বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানে কিছু মানুষ উচ্চস্বরে সাউন্ড বাজিয়ে চারপাশের পরিবেশকে অস্থির করে তুলে যা কোনো সভ্য সমাজের জন্য কাম্য হতে পারে না। এতে করে শিক্ষার্থী, শিশু-বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
অপরদিকে রাতব্যাপী চলা এসব অনুষ্ঠানের শব্দদূষণের কারণে মানুষের ঘুমের মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে। ঘুমের ব্যাঘাতের কারণে অনেক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। অল্প ঘুমিয়ে পরের দিন তারা কাজ-কর্ম সঠিকভাবে করতে পারেন না। যা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
এইসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা জানান, সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, কেউ যদি এসব সিদ্ধান্তের বাইরে যান, প্রথমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানাবেন। তারপরও যদি কেউ অমান্য করেন, তবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে পরিষদের চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. সায়দুল্লাহ মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা, পৌরসভার মেয়র, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফখরুল আলম আক্কাছ, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মির্জা মো. সুলায়মান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজ উদ্দিন, ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন, ভৈরব উপজেলা আলেম-ওলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আমিন প্রমুখ।