ভুলে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে গর্ভপাত করানোর চেষ্টা
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে এক নারীর পরিবর্তে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে জোর করে গর্ভপাত (ডিএনসি) ঘটানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার পর থেকেই ভুক্তভোগী ওই নারী জিয়াসমিন আক্তারের (২২) বর্তমান অবস্থা সংকটাপন্ন। জিয়াসমিন আক্তার জেলার সাটুরিয়া উপজেলার গর্জনা এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে বলে জানা গেছে।
এদিকে, আজ বুধবার সকালে ভুক্তভোগীর চাচা লুৎফর রহমান হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আরশ্বাদ উল্লার কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগের সূত্র ধরে ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জিয়াসমিন গত ২৪ জানুয়ারি মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের ২০ নম্বর বেডে শারীরিক অসুস্থজনিত কারণে ভর্তি হন। তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা । এরই মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ডা. নাসিমার নির্দেশে মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট ফাতেমা আক্তার অসুস্থ জিয়াসমিনকে বেড থেকে বের করে ডা. রুমা আক্তারের সহযোগিতায় জোর করে গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করেন।
এমতাবস্থায় জিয়াসমিন গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অপরদিকে, আজ বুধবার হাসপাতালে দায়িত্বরত গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. নাসিমা আক্তার বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি রাউন্ডে রোগী দেখছিলাম। এ বিষয়ে ডা. রুমা বলতে পারবেন।’
গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. রুমা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘গাইনি ওয়ার্ডের ২০ এবং ২১ নম্বর বেডে পাশাপাশি দুজন রোগী রয়েছে। ২১ নম্বর বেডের রোগীকে ডিএনসি করানো হবে। সেভাবেই তার চিকিৎসা চলছে। তবে ভুলক্রমে ২০ নম্বর রোগীকে মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট ফাতেমা বেগম নিয়ে আসেন।’
ঘটনার পর থেকে মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট ফাতেমা আত্মগোপনে রয়েছেন। তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আরশ্বাদ উল্লাহ বলেন, ‘হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের ২০ এবং ২১ নম্বর বেডে দুটি রোগী পাশাপাশি ছিল। ২১ নম্বর বেডের রোগীকে আনতে গিয়ে মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট ভুল করে ২০ নম্বর রোগীকে নিয়ে গর্ভপাতের চেষ্টা করেন। রোগীর কান্নাকাটি শুরু করলে গর্ভপাত ঘটানো থেকে বিরত থাকেন।’
এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।