ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত বন্ধ চায় বিএনপি
করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে দেশের সবগুলো স্থলবন্দর বন্ধের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। আজ শনিবার দুপুরে দলের ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘করোনার ভয়ঙ্কর প্রকোপে পর্যুদস্ত সেবা পরিস্থিতি। এরই মধ্যে ভারত বিশ্বে সংক্রমণের হারে সবার ঊর্ধ্বে। দেশটিতে সংক্রমণ মারাত্মক, সেখানকার পরিস্থিতি মারাত্মক। আমি ভারতের এ বিষয়টি এ কারণে উল্লেখ করছি যে, ভারতের সঙ্গে আমাদের এখনো প্রচুর পরিমাণে ব্যবসায়িক সম্পর্ক এবং স্থলপথে আমাদের নাগরিকদের যাতায়াত আছে। বিশেষ করে মেডিকেল ভিসা বা অন্যান্য কারণে।’
‘আমরা যেটা দেখছি সেটা হচ্ছে যে, পশ্চিমবাংলায় সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়েছে। সেজন্য আমরা মনে করছি, স্থলপথে যে সীমান্তগুলো আছে এই সীমান্তগুলো একেবারে বন্ধ করা দরকার। এরই মধ্যে বলা হয়েছে, বাইরে থেকে যারা বিমানে করে আসবেন, তাদের মাত্র তিনদিন কোয়ারেন্টিন করতে হবে। এটা আমি বিশ্বের কোথাও শুনিনি’, যোগ করেন বিএনপির মহাসচিব।
আজ শনিবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দেশটিতে একদিনে রেকর্ড সংখ্যক তিন লাখ ৪৬ হাজার ৭৮৬ জনের করোনা ধরা পড়ে। এ নিয়ে দেশটির মোট এক কোটি ৬৬ লাখ ১০ হাজার ৪৮১ জন করোনায় আক্রান্ত হলো। এদের মধ্যে এ পর্যন্ত এক লাখ ৮৯ হাজার ৫৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ ভারতে দুই হাজার ৬২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, সেখানে মৃতদের দাহ করার জন্য চিতা খালি পাওয়া যাচ্ছে না। কবর দিতে গিয়েও ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।
এই অবস্থার মধ্যেই বিএনপির পক্ষ থেকে ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত বন্ধের দাবি এলো।
‘ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দিতে জাতিকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলা হয়েছে’
মির্জা ফখরুল এ সময় টিকা নিয়ে সরকারের ‘অব্যবস্থাপনার’ সমালোচনা করে বলেন, ‘এক ব্যবসায়ীপ্রতিষ্ঠানকে টিকা সরবরাহের একচেটিয়া সুবিধা দিতে গিয়ে আজ সমগ্র জাতিকে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে বর্তমান সরকার। আমরা সুস্পষ্টভাবে টিকা সংগ্রহে সরকারের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
‘মনে রাখতে হবে, পুরো জাতি আজ এক মহাসংকট অতিবাহিত করছে। এ মুহূর্তে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত পরকিল্পনা গ্রহণ করে আমাদেরকে এ দুর্যোগ মোকাবলো করতে হবে। অন্যথায় এর দায় সরকারকইে বহন করতে হবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘করোনার টিকা সংগ্রহে স্বেচ্ছাচারিতা ও নতুন অনিশ্চয়তার সংবাদ আবারও সমগ্র জাতিকে গভীর হতাশা ও দুশ্চিন্তায় নিমজ্জিত করেছে। রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যবহার করে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠানকে টিকা সরবরাহের একচেটিয়া সুবিধা দিতে গিয়ে আজ সমগ্র জাতিকে এক ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে ভোটারবিহীন দুর্নীতিবাজ বর্তমান সরকার। আমরা সুস্পষ্টভাবে টিকা সংগ্রহে সরকারের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। প্রথম থেকেই ভারতের বিকল্প সূত্র থেকেও টিকা কেনার পরিকল্পনা নিলে আজ এই নিদারুণ অনিশ্চয়তায় পড়তে হতো না। আমরা প্রথম থেকেই এ কথাই বলে আসছিলাম। অবিলম্বে অন্য সূত্র হতে পর্যাপ্ত টিকা সংগ্রহের দাবি জানাচ্ছি।’