ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বড় হুজুরের ইন্তেকাল, জানাজায় মানুষের ঢল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রখ্যাত আলেম ভাদুঘর জামিয়া সিরাজীয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও শায়খুল হাদিস আল্লামা মনিরুজ্জামান সিরাজী (বর্তমান বড় হুজুর) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে ভাদুঘরে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন আল্লামা মনিরুজ্জামান সিরাজী। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আল্লামা মনিরুজ্জামান সিরাজীর মৃত্যুর সংবাদ শুনে সর্বমহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁকে একনজর দেখতে জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দোলা খান, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, জেলা বিএনপির নেতারাসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ বাসভবনে ছুটে যান। আল্লামা মনিরুজ্জামান সিরাজী ছিলেন হেফাজতে ইসলামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সভাপতি। তিনি ছিলেন ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার আমির।
এদিকে বিকেলে আল্লামা মনিরুজ্জামান সিরাজীর জানাজায় অংশ নিতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। ভাদুঘরে বাবা দেশের বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন মোফাসসিরে কোরআন বড় হুজুর মরহুম আল্লামা সিরাজুল ইসলাম সাহেবের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।
এর আগে আল্লামা মনিরুজ্জামান সিরাজীর ইন্তেকালের পর মরহুমের জানাজার স্থান ঠিক করা হয় শহরের ঈদগাহ মাঠে। সেখান থেকে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন মাদ্রাসা নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে জানাজার স্থান ঠিক করে স্টেডিয়ামে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুরোধ করে স্থান পরিবর্তন করে মরহুমের প্রতিষ্ঠিত ভাদুঘর জামিয়া সিরাজীয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে নামাজের স্থান নির্ধারণ করা হয়।
বাদ আসর জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় এক ঘণ্টা বিলম্বে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় ভাদুঘর সিরাজীয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে। এ সময় মহাসড়কের ও আশপাশের খালি জায়গায় জানাজা পড়ার জন্য মুসল্লিরা সমাবেত হয়। এতে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে প্রায় তিন ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। জানাজায় জেলার প্রখ্যাত আলেম ওলামাসহ বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশ নেয়। এ জন্য বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
জেলার পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমরা তাদের অনুরোধ করেছি স্বাস্থ্য বিধি মেনে জানাজায় অংশ নেওয়ার। সব কিছু স্বাভাবিক রাখতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার জানান, স্থানীয় আলেম সমাজের সঙ্গে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার কথা বলে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করে যাতে জানাজা হয় সে জন্য দুই দফায় জানাজার স্থান পরিবর্তন করা হয়।