ব্যারিস্টার কায়সার কামাল কারাগারে
মন ও সুনাম ক্ষতির অভিযোগে দায়ের করা প্রতারণার মামলায় বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস এ আদেশ দেন।
কায়সার কামালের আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া এনটিভি অনলাইনকে বলেন, আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ব্যারিস্টার কায়কার কামালকে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আওলাদ হোসেন তিন দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। অপরদিকে আইনজীবীরা তাঁর রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ডের আবেদন বাতিল করে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে কারা ফটকে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়ে কারাগারে পাঠান।
আদালতে জামিন শুনানির সময় ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তফা, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল অংশ নেন। আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া তাদের বরাত দিয়ে বলেন, ‘শুনানিতে আইনজীবীরা বলেছেন, মামলার ভিকটিম একজন চিকিৎসক। আসামি তাঁর থেকে সবসময় চিকিৎসা নিতেন। চিকিৎসা নিতে গিয়ে তাদের মধ্যে পরিচয় হয়। এটা ভুল বুঝাবুঝির মাধ্যমে মামলা হয়েছে।’
আইনজীবী আরো বলেন, পুলিশ রিমান্ড আবেদন করেছে নাম-ঠিকানা যাচাই-বাছাই করার জন্য। কায়সার কামাল ঢাকা আইনজীবী সমিতি, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য। এখানে রিমান্ডের কোনো যৌক্তিকতা নেই। আসামি ও বাদী উভয়েই আমাদের বন্ধু। সবাই আইনজীবী, ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমনটা হয়েছে। তাদের পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। সন্দেহের কারণে মামলা হয়েছে। পারিবারিকভাবে দুদিনের মধ্যে মামলাটা আমরা শেষ করে ফেলব। মামলাটি জামিনযোগ্য ধারার। জামিন পাওয়ার অধিকার তাঁর রয়েছে। তা ছাড়া আসামি অসুস্থ। যেকোনো শর্তে আমরা আসামির জামিনের প্রার্থনা করেছি।
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘যাদের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে, তাঁরাই এ ধরনের ন্যক্কারজনক কাজ করেন। আসামি দায়িত্বশীল ব্যক্তি, তাঁর এ ধরনের কাজ মানায় না।’
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামির সঙ্গে বাদীর আগে থেকে পেশাগত ও রাজনৈতিকভাবে পরিচয় আছে। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি একটি মামলায় গ্রেপ্তারি এড়াতে আসামি কায়সার কামাল বাদীর বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেন। বাদীর স্ত্রী রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে পুষ্টিবিদ। আসামিসহ অনেক আইনজীবীই সেই পুষ্টিবিদের কাছ থেকে ডায়েটচার্ট নেন।
একপর্যায়ে প্রতারণার মাধ্যমে আসামি কায়সার কামাল ওই পুষ্টিবিদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেন। তাদের একই গাড়িতে দেখা গেছে। বিষয়টি পারিবারিকভাবেও আসামিকে বুঝোনো হয়, কিন্তু তিনি তাঁর অবস্থান থেকে সরে আসেননি। বরং দুজনকে বিভিন্ন সময় একই গাড়িতে দেখা গেছে।
এতে আরো বলা হয়, গতকাল বুধবার বাদী তাঁর স্ত্রীকে পুনরায় আসামির গাড়িতে উঠতে দেখেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সেখানে পুলিশ এসে তিনজনকে কলাবাগান থানায় নিয়ে যায়।
মামলার বাদী অভিযোগ করে বলেছেন, এই কারণে তিনি সামাজিকভাবে হেয়-প্রতিপন্ন হচ্ছেন এবং তাঁর সংসার ভাঙ্গার উপক্রম হয়েছে। এই অবৈধ সম্পর্কের কারণে তাঁর সংসারের সুখ-শান্তি বিনষ্ট হয়েছে এবং মৌন ক্ষতি হয়েছে। যা প্রতারণার শামিল।