বেনাপোলে হেলে পড়েছে ৫ তলা ভবন
বেনাপোল কাস্টম হাউসের কাছে এক বছর ধরে পাঁচতলা একটি ভবন পাশের ভবনের দিকে হেলে পড়ে আছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে ভবনে বসবাসকারীসহ আশপাশের লোকজন।
১০ মাস আগে বিষয়টি বেনাপোল পৌরসভাকে জানানো হলেও এখনও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, ভবনটি নির্মাণের সময় টেকনিক্যাল সমস্যা হয়েছে। এ নিয়ে মালিককে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো দায়ভার নেবে না। সব দায়ভার ভবনের মালিককেই নিতে হবে।
হেলেপড়া ভবনের পাশের ভবনে ‘রবি চেম্বারের’ মালিকের ছেলে শরিফুল ইসলাম নয়ন বলেন, ‘২০১৮ সালে আমাদের পাশে বেনাপোলের ছোটআঁচড়া গ্রামের ইজাজুল হক ইজাজ একটি পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করেন। সেই ভবনের পাশে আমার একটি চারতলা ভবন রয়েছে। গত বছরের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে ইজাজের ভবনটি আমার চারতলা ভবনের দিকে হেলে পড়ে। ভূমিকম্প বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এতে ওই দুই ভবনসহ আশপাশের কয়েকটি ছোটখাটো ভবনের কয়েকশ লোক ঝুঁকিতে রয়েছে।’
নয়ন অভিযোগ করে বলেন, ‘ভবনটির দক্ষিণ পাশের ৪২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রস্থবিশিষ্ট রাস্তা ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে পৌরসভা নকশা অনুমোদন করে। কিন্তু ইজাজ পৌরসভার আইন অমান্য করে রাস্তার জন্য ১০ ফুটের স্থলে সাত ফুট জায়গা রেখে বাকি তিন ফুট জায়গা নিজ দখলে নিয়েই ভবন নির্মাণ করেন। ভবন হেলে পড়ার বিষয়টি ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর লিখিতভাবে বেনাপোল পৌরসভাকে জানানো হলেও আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
ভবনের আশপাশের অনেকের অভিযোগ, এভাবে একটি ভবন আরেকটি ভবনের ওপর হেলে পড়ে থাকা মানে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা। এমন অবস্থায় হেলেপড়া ভবনটির ব্যাপারে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জরুরি ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এ ভবনগুলো যেখানে নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে গর্ত ছিল। নিচে মাটি ভরাট করে পাইলিং না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যেকোনো সময় ভবনটি ধসে পড়তে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি বিক্রির চেষ্টা করছেন ইজাজ। ক্রেতাও ঠিক হয়েছিল। কিন্তু পরে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ জেনে তারা কিনতে রাজি হয়নি।’
এ বিষয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মালিক ইজাজুল হক বলেন, ‘আমার ভবন নির্মাণের সময় উপরের দিক যেতে যেতে ওই ভবনের সঙ্গে কিছুটা মিশে গেছে। আমি কিছু অংশ কেটে ফাঁকা করেছি বাকিটুকু কাটা হবে। এতে তেমন কোনো ঝুঁকি নেই। এ ছাড়া আমি চারপাশে আবারও গ্রেড ভিম দেব, যাতে কোনো অসুবিধা না হয়।’
বেনাপোল পৌরসভার সার্ভেয়ার মফিজুর রহমান বলেন, ‘এ নিয়ে রবি চেম্বার থেকে একটি আবেদন দিয়েছে। তেমন কোনো অসুবিধা নেই। এর পরও আমাদের প্রকৌশলী বিষয়টি দেখছেন।’
এ ব্যাপারে পৌর প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি দেখেছি। ভবন নির্মাণের সময় কিছুটা টেকনিক্যাল সমস্যা হয়েছে। পৌরসভা থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো দায়ভার নেবে না। সব ধরনের দায়ভার ভবন মালিক ইজাজকেই নিতে হবে।’