বিয়ের দিন প্রেমিকাকে কুপিয়ে জখম
প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় রংপুরের বদরগঞ্জে বিয়ের দিন ভোরে ঘুম থেকে ডেকে তুলে তারমিনা আক্তার ফুলতি (১৪) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের সাজানো গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
তারমিনা আক্তার ফুলতি লোহানীপাড়া দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাঁর বাবার নাম তোয়াব আলী। বর্তমানে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতাল ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বদরগঞ্জ উপজেলার পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়বালা এলাকায় তারমিনা আক্তারের বড়বোন তহমিনার বিয়ে হয়। সেই আত্মীয়তার সম্পর্কে তারমিনাকে ওই এলাকার শাখাওয়াত প্রেমের প্রস্তাব দেন। শাখাওয়াত এরপর থেকেই তারমিনাকে নানাভাবে বিরক্ত করতেন। পরে তারমিনা আক্তারের অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়। আজ বুধবার সকালে তাঁর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিয়ের খবর জেনে শাখাওয়াত ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। আজ ভোরের দিকে মোটরসাইকেলে নিজ বাড়ি থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরের তারমিনার বাড়িতে আসেন শাখাওয়াত। বাড়ির সবাই যখন ঘুমিয়ে ছিল তখন তারমিনাকে দরজার কাছে ডেকে নেয় শাখাওয়াত। এ সময় ছুরি দিয়ে পা, মুখে, কপালে ও পাজরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেন। এতে তারমিনা চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে বাড়ির লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। এ অবস্থায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অজ্ঞান হয়ে পড়ে তারমিনা। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে শাখাওয়াত হোসেনকে ধাওয়া দেয়। এতে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান তিনি।
পরে তারমিনাকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে চিকিৎসাধিন রয়েছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের স্টাফ নার্স রেবেকা সুলতানা বলেন, ‘মারাত্মক আহত অবস্থায় মেয়েটিকে আজ সকাল ৮টার দিকে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে অধ্যাপক ডা. জাভেদ আখতারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জখম মারাত্মক হওয়ায় সুস্থ হতে কতদিন সময় লাগবে তা বোঝা যাচ্ছে না।’
বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ভোরবেলার ঘটনাটি শুনেছি। কিন্তু এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দিতে থানায় আসেনি। একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।’
লোহানীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাকিব হাসান ডলু শাহ্ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মেয়েটির পরিবারকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’