বিশ্বের ১৩ দেশে করোনাভাইরাস, চীনে যাতায়াত বন্ধের চিন্তা নেই : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৩টি দেশে করোনাভাইরাস প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে কেউ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজেই করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। চীনের সঙ্গে যাতায়াত বন্ধের চিন্তাও নেই।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৩টি মতো দেশে করোনাভাইরাস প্রবেশ করলেও বাংলাদেশে একটি মানুষও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। সীমান্ত এলাকার সব ইউনিটেই আমরা স্ক্যান মেশিন বসিয়েছি। প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কুর্মিটোলা হাসপাতালে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য আলাদা একটি আইসোলেটেড কেবিন খোলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ সামগ্রী ও উপকরণ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে আমরা হাসপাতালগুলোতে আলাদা হটলাইন চালু করেছি এবং বিমানবন্দরে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের হাতে করোনাভাইরাসের সতর্কতা, করণীয় ও যোগাযোগ নম্বর সংবলিত কার্ড দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশের স্বাস্থ্য খাতসহ সব ইউনিট একযোগে কাজ করে যাচ্ছে এবং আমরা সবাই একে মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি।’
করোনাভাইরাস নিয়ে দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আলোচিত করোনাভাইরাস সার্স ভাইরাসের মতো ভয়াবহ নয়। এই ভাইরাস শীতকালে দেখা দিলেও গরমের সময় এটি টিকতে পারবে না। কাজেই এই ভাইরাস নিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত হওয়া যাবে না।’
চীনের উহান প্রদেশে আটকা পড়া শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, উহানে ৩১৭ জনের মত শিক্ষার্থীকে ফিরিয়ে আনতে সরকার উদ্যোগ নিলেও চীন সরকার ১৪ দিনের মধ্যে সেখান থেকে বের হওয়ার নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় আপাতত আনা যাচ্ছে না। তবে শিক্ষার্থীদের সাথে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে। ১৪ দিনের রেস্ট্রিকশন পিরিয়ড শেষ হলেই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।’
চীনের সাথে বাংলাদেশের সকল ধরনের যাতায়াত ব্যবস্থা সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখা যায় কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাণিজ্যিকভাবে চীনের সাথে বাংলাদেশের বহুবিধ সম্পর্ক রয়েছে। পৃথিবীর অন্যকোনো দেশই চীনের সাথে তাঁদের যোগাযোগ বন্ধ করেনি। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এব্যাপারে আমাদেরকে কিছু বলেনি। কাজেই চীনের সাথে যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ রাখার কোনো চিন্তা-ভাবনা সরকারের আপাতত নেই।’
এর আগে বেলা সাড়ে ১২ টায় করোনাভাইরাস নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে একটি আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন এর সভাপতি অধ্যাপক আহমেদুল কবীর, কিটস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রোবেন, বিশ্ব ব্যাংকের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধি শিউ ওয়াং, জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, শিল্প, বিমান ও পর্যটন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কীটস বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।