বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে আলোকসজ্জায় নিষেধাজ্ঞা
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে আলোকসজ্জায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, ‘বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার, শপিং মল, দোকানপাট, অফিস ও বাসাবাড়িতে আলোকসজ্জা না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
এর আগে আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘পিক আওয়ারে দুই হাজার মেগাওয়াট চাহিদা কমানো গেলে লোডশেডিংয়ের চাপ নাও থাকতে পারে। তবে, গ্রাম ও শহরে লোডশেডিং বণ্টনে ন্যায্যতা আনা কঠিন। গ্রামের মানুষকে ভুগতে হবে বেশি।’
তৌফিক-ই-ইলাহী আরও বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহার কমাতে অফিস সময়ও কমিয়ে আনার কথা ভাবছে সরকার। আবারও চালু হতে পারে হোম অফিস।’
বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন একটা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ অবস্থায় সবাইকে সচেতন হয়ে কাজ করতে হবে৷ সাতদিনের মধ্যে প্রত্যেক বিতরণসংস্থাকে অ্যাপস ডেভেলপ করতে বলা হয়েছে৷ সবাই মেনে চললে ৫০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হবে না৷’
তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, ‘সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। ১৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দৈনন্দিন প্রয়োজন হবে৷ সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ ব্যবহার নিশ্চিত করা হলে, এই চাহিদা ১২ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটে নামিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব৷’ সেপ্টেম্বরের আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।
এর আগে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এক ভিডিও বার্তায় দেশবাসীকে তেল ও গ্যাস ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, ‘গত ছয় থেকে সাত মাস ধরে জ্বালানি তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যে তেল আমরা ৭০ থেকে ৭১ ডলারে কিনতাম, সেটা এখন ১৭১ ডলার হয়ে গেছে। সেটা সব সময় বাড়তির দিকেই যাচ্ছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নিজেদের অর্থ দিয়ে ভর্তুকি দিয়ে আসছি। তবে, এখন মনে হয় আমাদের দামের সমন্বয় করতে। বাংলাদেশের ৬৪ শতাংশ বিদ্যুতের পাওয়ার প্লান্ট গ্যাস দিয়ে চলে। আমাদের নিজস্ব প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন দিনদিন বাড়ছে, আবার কমছেও। যেটা আমরা বাড়াচ্ছি, যে খনিগুলো থেকে গ্যাস পাচ্ছি, সেটা খুব স্বল্প পরিমাণে। কিন্তু, কমছে খুব।’
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেল এবং গ্যাসের দামে প্রচণ্ডভাবে প্রভাব ফেলেছে জানিয়ে নসরুল হামিদ তেল, গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে পরামর্শ দেন।
এর আগে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাশিয়ার ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার ফলে এখন পুরো বিশ্বেরই নাভিশ্বাস অবস্থা। এ অবস্থায় আমাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র চালিয়ে রাখা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাই, বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের শিডিউল করে দিতে বলা হয়েছে।’