বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি দেশের শিল্পের শক্তি ধ্বংস করে দেবে : বিএনপি
বিদ্যুৎ ও পানির বিল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘গ্যাসের দাম বাড়ানোর মাত্র আট মাসের মাথায় আবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলো। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি দেশের শিল্পের শক্তি ধ্বংস করে দেবে। ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যক্তা ও ব্যবসায়ীদের জন্য অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।’
আজ শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস দশার কথা বিবেচনা না করে সম্পূর্ণ গণবিরোধী এই সরকার বিদ্যুৎ ও ওয়াসার পানির দাম আবারও বাড়িয়ে দিয়েছে। ‘যখন ইচ্ছা বিদ্যুতের দাম বাড়াতে পারবে সরকার’—এই স্বেচ্ছাচারী আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করিয়ে জনগণের ওপর ভয়াবহ জুলুম চালাচ্ছে শাসকরা। গণমানুষ, ভোক্তা অধিকার কিংবা ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর যুক্তি-অনুরোধ কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে যখন মন চাচ্ছে, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে।’
রিজভী বলেন, ‘দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রাহকদের পকেট থেকে বছরে দুই হাজার কোটি টাকা লুটে নেবে আওয়ামী সিন্ডিকেট। লুটপাটের বড় অনুষঙ্গ কুইক রেন্টাল করে এখন বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়া গুনতে হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। গতবার কুইক রেন্টালগুলো উৎপাদন না করলেও ভাড়া দিতে হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। এ বছর দিতে হবে ২০ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা ক্ষমতাসীন দলের ব্যবসায়ীরা পাচার করে দিচ্ছে বিদেশে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশের শিল্পকারখানা ধ্বংস করে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান বন্ধের মাধ্যমে, দেশকে বড় ধরনের বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা হারাচ্ছে শত শত প্রতিষ্ঠান। সেচ বিদ্যুতের দাম বাড়ায় কৃষিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় বিদ্যুৎ, ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধিসহ গণবিরোধী সব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’
খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘কেবল উন্নত চিকিৎসার জন্যই নয়, তিনি একজন মহীয়সী নারী। তাঁর বয়স, অসুস্থতাসহ সকল বিবেচনায় তিনি জামিনের যোগ্য হলেও জামিন পেলেন না। আবারও তাঁকে তাঁর মানবাধিকার, মৌলিক সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলো। এটা গোটা বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য। মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর সেক্টর কমান্ডারের সহধর্মিণীকে আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’
খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজের প্রতিবাদে আগামীকাল শনিবার ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী মহানগর ও জেলা সদরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন রিজভী। শনিবার দুপুর ২টায় ঢাকার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে বিক্ষোভ কর্মসূচি সফল করার জন্য আহ্বান জানান রিজভী।