বিদেশ থেকে এসেছেন ৩১৯৪ জন, কোয়ারেন্টিনে মাত্র ৩০!
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মহামারীর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মোট তিন হাজার ১৯৪ জন প্রবাসী বাগেরহাটে ফিরেছেন। এর মধ্যে আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত মাত্র ৩০ জনের ‘হোম কোয়ারেন্টিন’ নিশ্চিত করা গেছে।
৩০ জনের মধ্যে ২৪ জনকেই গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। গতকালকের আগে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ ছিলেন মাত্র ছয়জন। ছয়জনের মধ্যে তিনজন ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন-পর্ব শেষ করে সুস্থ আছেন।
কিন্তু প্রবাস থেকে ফেরা বাকি তিন হাজার ১৬৪ জন দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এলাকায় মানুষের সঙ্গে মিশছেন।
বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে থাকা মাত্র ২৭ প্রবাসীর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে শরণখোলায় উপজেলা সরকারি হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে রাখা আ. আউয়াল হাওলাদার (৬৪) নামের এক রোগীর শরীর থেকে আজ দুপুরে নমুনা সংগ্রহ করেছে আইইডিসিআর থেকে আসা টিমের সদস্যরা।
বাগেরহাটে আজ সকাল পর্যন্ত নতুন করে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ থাকা ২৪ প্রবাসীর মধ্যে একজন ইতালি, একজন জার্মানি, তিনজন সিঙ্গাপুর ও ১৯ জন ভারত থেকে দেশে এসেছেন। বাগেরহাট জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রবাসীদের ফিরে আসার বিষয়ে বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির জানান, করোনা আতংকে এতো বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাগেরহাটে নিজ-নিজ বাড়িতে এসেছে তা আমাদের জানা ছিল না। আজ বাগেরহাটের পুলিশ সুপারের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন বিভাগের এই তালিকা তাঁর কাছে এসেছে। মাঠপর্যায়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ৪৬৫টি পদের মধ্যে এখন লোকবল রয়েছে মাত্র ১২৫ জন। তালিকা ধরে ধরে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও প্রশাসনের সহয়তায় এই বিপুল সংখ্যক প্রবাসীকে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ রাখার কাজ চলছে।
এ জেলায় কোয়ারেন্টিনে রাখা তিনজনের মেয়াদ শেষে তারা সুস্থ রয়েছেন। আজ সকাল পর্যন্ত নতুন করে ২৪ জনকে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ রাখা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
তিনি আরো জানান, জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সে কথা হয়েছে। এরমধ্যে ওই তিন বিভাগ কাজ শুরু করেছে। সেখানের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে যত দ্রুত সম্ভব বিদেশ ফেরতদের ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে করোনাভাইরাস আতঙ্কে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে সব ধরনের যান প্রবেশ নিষেধ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এর ফলে হাসপাতালের প্রধান গেট বন্ধ করে পাহারা বসানো হয়েছে। সেখানে রোগীদের নিয়ে যানবাহন প্রবেশ করার কথা থাকলেও গেটম্যান কাউকেই প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। ফলে প্রতিনিয়ত হচ্ছে বাকবিতণ্ডা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মারাত্মক অপারেশনের রোগীরাও গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করতে পারছে না। এখানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন করোনা-আক্রান্ত রোগী না থাকলেও প্রসাশন নিয়েছে এমন কড়াকড়ি।