‘বিএনপি-পাগল’ রিজভী হাওলাদার আর নেই। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।

রাজধানীর যেখানেই বিএনপির কর্মসূচি হয়েছে, প্রায় সবখানেই দেখা মিলত রিজভী হাওলাদারের। কখনো কাফনের কাপড়ে শরীর মুড়ে, কখনো আবার ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’ বা ‘তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার চাই’ এমন সব ব্যানারে নিজেকে মুড়িয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন তিনি।

গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর কয়েক দিন না খেয়ে টাকা জমিয়ে খালেদা জিয়ার জন্য ফল নিয়ে কারাফটকে যান। এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কারাফটকে অবস্থান করেন। এ ছাড়া বিএনপি নেত্রীর মুক্তির দাবিতে কাফনের কাপড় পরে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অবস্থান নেন।

শায়রুল কবীর বলেন, ‘আমাদের দলপাগল রিজভী হাওলাদার ইন্তেকাল করেছেন। মধ্যরাত পর্যন্ত তাঁর লাশ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে ছিল। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ছাত্রদলের দপ্তরের দায়িত্বে থাকা আবদুস সাত্তার পাটোয়ারীসহ অন্য নেতারা খবর শুনে সেখানে ছুটে আসেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গতকাল শনিবার রাত দেড়টার দিকে রিজভী হাওলাদারের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি : এনটিভি

সাত্তার পাটোয়ারী রাত সাড়ে ১২টার দিকে জানান, শনিবার চিকিৎসার জন্য কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে যান রিজভী হাওলাদার। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যান। ঢামেক থেকে তিনি নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আসছিলেন। কার্যালয়ের সামনে এসে রিকশা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর।

সাত্তার পাটোয়ারী আরো বলেন, ‘রাত দেড়টার দিকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে রিজভী হাওলাদারের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল এবং আমিসহ অন্যরা সেখানে আছি। জানাজা শেষে রাতেই তাঁর লাশ বাউফলের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।’

রিজভী হাওলাদারের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ছোট্টকান্দা গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আজহার হাওলাদার। নারায়ণগঞ্জের কুতুবপুরে থাকতেন রিজভী হাওলাদার। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

প্রায় প্রতিদিন ভোরে বিএনপি কার্যালয় এলাকায় আসতেন রিজভী হাওলাদার। সন্ধ্যার পর আবার নারায়ণগঞ্জ ফিরে যেতেন।