বাসচাপায় পা হারানো রাসেলকে আরো ২০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ
গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসচাপায় পা হারানো প্রাইভেটকারচালক রাসেল সরকারকে (২৩) তিন মাসের মধ্যে ২০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই টাকা গ্রিনলাইন পরিবহনের মালিককে পরিশোধ করতে হবে বলে হাইকোর্ট রায়ে বলেছেন।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন। এদিন আদালতে রাসেলের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন খন্দকার সামসুল হক রেজা। অপরদিকে গ্রিনলাইন পরিবহনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক। এর আগে গত ৫ মার্চ এ মামলায় ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত ১৫ এপ্রিল রায়ের জন্য তারিখ রাখেন। কিন্তু, করোনাভাইরাসের কারণে আদালতে ছুটি থাকায় ধার্য তারিখে রায় হয়নি। পরে আজ রায়ের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে কথাকাটাকাটির জেরে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসচালক ক্ষিপ্ত হয়ে এক প্রাইভেটকার চালকের ওপর দিয়েই বাস চালিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারের বাঁ পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পা হারানো রাসেল সরকারের বাবার নাম শফিকুল ইসলাম। গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার জেলার পলাশবাড়ীতে। ঢাকার আদাবর এলাকার সুনিবিড় হাউজিং এলাকায় তাঁর বাসা।
এ ঘটনায় সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। পরে আদালত রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন। এ রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০১৮ সালের ১৪ মে রুল জারি করেন। রুলে কেন রাসেলকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
এই রুলের পর গত বছরের মার্চে হাইকোর্ট এক আদেশে রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা এবং প্রয়োজনে তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার ও কাটা পড়া বাঁ-পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম পা লাগানোর খরচ বহন করতে গ্রিন লাইন পরিবহনকে নির্দেশ দেন। পরবর্তী সময়ে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের অক্টোবরে আপিল বিভাগ প্রতি মাসে রাসেলকে পাঁচ লাখ টাকা করে কিস্তিতে গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষকে অর্থ পরিশোধ করতে দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন এবং রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
এদিকে, রায়ের আগে উচ্চ আদালতের আদেশের পর গত বছর দুই দফায় ১০ লাখ টাকা দিয়েছে গ্রিন লাইন কতৃপক্ষ। আর চিকিৎসাবাবদ দিয়েছিল তিন লাখ ৪২ হাজার টাকা।