বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া ঠিক হবে না : সিপিডি
আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর চাপ কমাতে করমুক্ত আয়সীমা দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। সেই সঙ্গে সংস্থাটি মনে করে, বাজেটে কালো টাকা সাদা করার কোনো সুযোগ দেওয়া ঠিক হবে না।
বাজেটে স্বাস্থ্য সুরক্ষা, কৃষি, সামাজিক নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্ব দিতে হবে বলেও সিপিডি সুপারিশ করেছে।
আজ শনিবার ‘কোভিড-১৯ : বর্তমান প্রেক্ষাপট ও বাজেট ২০২০-২১’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।
সিপিডি বলছে, চলমান কোভিড-১৯ মহামারির প্রেক্ষাপটে ২০২০-২১ অর্থবছরে বিভিন্ন অর্থনৈতিক ঝুঁকির মধ্যে থাকবে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এ অবস্থায় জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রণয়ন করা উচিত।
সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, চলমান মহামারির ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরে জাতীয় অর্থনীতি বিভিন্নমুখী ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। বাস্তবসম্মত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের মাধ্যমে এসব ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য একটি সম্প্রসারণমূলক বাজেট প্রণয়ন করা জরুরি। বিভিন্ন সরকারি ব্যয় ও বরাদ্দের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করা উচিত।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন মিতব্যায়ী হয়ে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমে অর্থের সংস্থানের পরামর্শ দিয়ে বলেন, প্রশাসনিক ও অন্যান্য অনুৎপাদনশীল খাতে সরকারের ৫০ শতাংশ ব্যয় কমানোর সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন দাপ্তরিক কার্যকমে ও সরকারি পরিবহন ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরো স্বচ্ছতা আনয়নের মাধ্যমে সরকারের সাশ্রয়ী ও ব্যয় সংকোচনমূলক নীতি গ্রহণ করা যেতে পারে।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও অপ্রত্যক্ষ করের ওপর বেশি চাপ না দেয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি বলেন, চলমান মহামারির ফলে দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ, যারা দৈনিক ও চুক্তিভিত্তিক মজুরির ওপর নির্ভরশীল, তাঁরা এক বড় ধরনের অর্থনৈতিক শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন। একই সঙ্গে, প্রবাসী কর্মীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দেশে ফিরে এসেছে এবং অনেকে কর্মহীন অবস্থায় রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রবাসী কর্মীসহ দেশের কর্মহীন জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারের একটি অর্থিক সহযোগিতা কাঠামো বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। ২০১৩ সালের পর থেকে দেশে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। এসব খাতে ধারাবাহিকভাবে নিয়োগের মাধ্যমে স্বাস্থ্য জনবল কাঠামো শক্তিশালী ও দক্ষ করার সুযোগ রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম সরকারের অনুন্নয়ন ব্যয় কমানোর পরামর্শ দিয়ে আগামী অর্থবছরে এ ধরনের ব্যয় কমানো উচিত বলে মত দেন। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষি খাতে ভর্তুকি বৃদ্ধি ও অব্যাহত রাখা এবং বিভিন্ন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়নের ওপর সরকারের জোর দেওয়া উচিত বলেও জানান ড. মোয়াজ্জেম।