মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, একাত্তর সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসাম্প্রদায়িকতার বিজয়ের মাধ্যমে মীমাংসিত হয়েছে বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক শক্তির দেশ। আমাদের জাতিসত্তার পরিচয় আমরা বাঙালি। আমরা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে মোকাবিলা করেছি একাত্তরে। একাত্তর সালেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, এ দেশ সাম্প্রদায়িক অপশক্তির নয়, অসাম্প্রদায়িক শক্তির।

আজ মঙ্গলবার পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে কৃষি প্রণোদনা (সার, বীজ ও কৃষি যন্ত্রপাতি) বিতরণ অনুষ্ঠান উদ্বোধন রাজধানীর বেইলী রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন, অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে জঙ্গি আচরণের মধ্য দিয়ে যারা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে ধ্বংসের চেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের ব্যাপারে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। ইসলামের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু সরকার ও শেখ হাসিনা সরকার যা করেছে, তা অন্য কোনো সরকার করেনি উল্লেখ করে এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমানে শেখ হাসিনা ইসলামের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে কাজ করছেন। পাশাপাশি তিনি অন্য ধর্মের জন্যও কাজ করছেন। অথচ একদল ধর্ম ব্যবসায়ী বোঝাতে চাইছে, শেখ হাসিনার কাছে ইসলাম নিরাপদ নয়। ইসলামের যারা প্রকৃত আলেম-ওলামা তারা এতে বিশ্বাস করেন না। ধর্ম ব্যবসায়ীরা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। প্রকৃত ইসলামকে যারা ধারণ করেন, তাঁরা এ জাতীয় অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। অননৈতিক কাজে যারা জড়িত, তাদের কাছে ইসলাম নিরাপদ কি না, ভাবতে হবে। যারা একাত্তরে ধর্ষণ, লুণ্ঠনে সহায়তা করেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে—তাদের হাতে ইসলাম নিরাপদ কি না, সেটা বিবেচনায় রাখতে হবে।

এ সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। এই বাংলাদেশ যেন কেউ ধ্বংস করতে না পারে। এজন্য যেখানে যখনি অসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থা সৃষ্টি করবে তখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলে তাদের সমূলে বিনাশ করতে হবে। এ আহ্বান জানান শ ম রেজাউল করিম।

বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার উল্লেখ করে এ সময় মন্ত্রী আরও যোগ করেন, “বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যেমন কৃষকদের বিনামূল্যে সার, কীটনাশক ও কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছিলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও একই প্রক্রিয়ায় সে ধারা অব্যাহত রেখেছেন। আজ কৃষকদের কোথাও হাহাকার করতে হয় না। শেখ হাসিনা সরকার না চাইতেই কৃষকদের ভর্তুকি দিয়ে কৃষি সরঞ্জামাদি, সার, কীটনাশক সরবরাহ করছে। কৃষকদের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে। তাহলে আমরা খাদ্যে পরিপূর্ণতা অর্জন করতে পারব। আজ দেশ মাছ, মাংস, ডিমসহ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কৃষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।” করোনাকালে কৃষি, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য কর্মকর্তাদের মাঠে কৃষকদের সহায়তা করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নাজিরপুরের বিশিষ্ট সমাজ সেবক এস এম নজরুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মুস্তাফিজুর রহমান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার ফেরদৌস রুনা, নাজিরপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন ফরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।