বন্যা পরিস্থিতির অবনতির মধ্যেই আরো বৃষ্টির পূর্বাভাস
একদিকে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে হাজার হাজার মানুষকে পানিবন্দি অবস্থায় দিনাতিপাত করতে হচ্ছে; অপরদিকে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি এলাকায় বজ্রসহ আরো বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, অন্তত ১৯টি জেলায় এই বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে এক নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আর গতকাল রোববারই বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র সতর্ক দিয়ে বলছে, দেশের নয়টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। দেশের প্রধান প্রধান নদীগুলোর পানি বাড়ছে। কোথাও কোথাও বিপৎসীমার উপর দিয়েও প্রবাহিত হচ্ছে।
আজ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে উল্লেখ করে আবহাওয়ার বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, এ ছাড়া ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের বেশিরভাগ জায়গায় এবং চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা মাঝরি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।
এ ছাড়া আবহাওয়া পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, দেশের পম্চিমাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং অন্যত্র তা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর আরেক বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাংগাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ–পূর্বদিক থেকে ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
গতকাল দেশের যে ৯টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে জানানো হয়েছিল সেগুলো হচ্ছে- কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, সিলেট, নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ।
এ ছাড়া দেশের সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী তিন দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।
এই সময়ে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং বিপৎসীমার উপরে অবস্থান করতে পারে।
অপরদিকে লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
দেশের পর্যবেক্ষণাধীন ১০১টি পানি স্টেশনের মধ্যে ৮২টি স্টেশনের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে হ্রাস পেয়েছে ১৩টি পানি স্টেশনের। এ ছাড়া দুটি স্টেশনের পানি অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।