বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল মাজেদের ফাঁসি কবে নাগাদ কার্যকর হবে এ নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। গতকাল বুধবার প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় তার দণ্ড কার্যকর সময়ের ব্যাপারমাত্র।

রায় বাস্তবায়নের সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে কারা কর্তৃপক্ষ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সবুজ সংকেত পেলেই কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির মঞ্চে ঝুলানো হবে খুনি মাজেদকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারা কর্তৃপক্ষ জানান, ফাঁসির মঞ্চ সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে জল্লাদের একটি দল। যেকোনো সময় কার্যকর হতে পারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি আবদুল মাজেদের ফাঁসি।

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, আগামী শনি অথবা রোববার ফাঁসি কার্যকরের সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা বৃহস্পতিবার পবিত্র শবে বরাতের রাত এবং শুক্রবারে কারাগারে ফাঁসির নজির নেই। এ কারণে শনিবার বা রোববার রাতে ফাঁসি কার্যকর হতে পারে।

এর আগে বুধবার রাতেই রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো মাজেদের প্রাণভিক্ষার আবেদনটি খারিজ করা হয়। এরপর সেই চিঠিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছে। কারাবিধি অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম চলবে।

এদিকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এখন পর্যন্ত কোনো ফাঁসি কার্যকর হয়নি। তবে মঞ্চটি সবসময় প্রস্তুত থাকে। সম্প্রতি নতুন করে পরিষ্কার করা হয়েছে। এতে যেকোনো সময় ফাঁসি কার্যকর করা যাবে।

মাজেদের ফাঁসির বিষয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরীকে ফোন দেওয়া হলে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আবদুল মাজেদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। প্রাণভিক্ষার আবেদন বাতিল হয়ে যাওয়ায় ফাঁসির আদেশ কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকলো না। এখন পরবর্তী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাঁর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হবে।

এর আগে ২৩ বছর ধরে পলাতক আবদুল মাজেদকে সোমবার মধ্যরাতে মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।

পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে মাজেদকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে সিটিটিসি। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

পরদিন বুধবার মৃত্যুর পরোয়ানা পড়ে শোনানোর পর সব দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান আবদুল মাজেদ। পরে প্রাণভিক্ষার আবেদনটি নাকচ করে দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।