বংশালে সাইকেল ব্যবসায়ীর গোপন বাণিজ্যিক হিসাব জব্দ
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের দল রাজধানীর বংশালে একটি সাইকেল ব্যবসায়ীর প্রাঙ্গণ থেকে গোপন হিসাবপত্র আটক করেছে। এতে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ বুধবার ভ্যাট গোয়েন্দার দল এই অভিযান পরিচালনা করে। সংস্থার উপপরিচালক তানভীর আহমেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন বলে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির নাম সিরাজ সাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ১৪১ বংশাল রোড, বংশাল। এর মূসক নম্বর ০০০১৮৯৭১১-০১০৩।
সিরাজ সাইকেলের কারখানা গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদে অবস্থিত। তবে বংশালে প্রতিষ্ঠানটির হেড অফিস ও এখানে বাণিজ্যিক হিসাবপত্র সংরক্ষণ করা হয়।
ভ্যাট গোয়েন্দা কর্তৃক সাইকেল ব্যবসায়ীর নিয়মিত অডিট চলাকালে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী হিসাবপত্র দাখিল করতে বললে তারা সেগুলো না দিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে।
অডিট শুরুর দীর্ঘ এক বছর পরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সিরাজ সাইকেল কিছু কাগজ দাখিল করলে তাতে গোয়েন্দাদের সন্দেহ হয়।
গোয়েন্দা দল প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে যাচাই করে ভ্যাটের হিসাবে গরমিল পায়। গোয়েন্দাদের কাছে দাখিলকৃত তথ্যাদি ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে মনগড়া ও বানানো বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
আজ গোয়েন্দা সংবাদ অনুযায়ী বংশালের অফিস থেকে সিএ ফার্ম এমএন ইসলাম অ্যান্ড কোম্পানি কর্তৃক নিরীক্ষিত রিপোর্ট ও অন্যান্য বাণিজ্যিক তথ্যাদি উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার করা এসব তথ্যে প্রাথমিকভাবে দেখা যায় যে, কেবল ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সিরাজ সাইকেল বিক্রয় প্রদর্শন করেছে ১৯.৭৩ কোটি টাকা। কিন্তু আটককৃত সিএ রিপোর্ট ও বাণিজ্যিক কাগজপত্র অনুযায়ী, এই হিসাব ৭৩.৮৬ কোটি টাকা। এই তথ্য বলছে, কেবল এক বছরে সিরাজ সাইকেল বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে ৫৪.১৪ কোটি টাকা।
ভ্যাট কর্তৃপক্ষের কাছে আগে দাখিলকৃত হিসাব অনুযায়ী, এক বছর সময়ে তারা প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে প্রায় ২৭৪ শতাংশ।
গোয়েন্দা দল গভীর অনুসন্ধান করে গত পাঁচ বছরের হিসাব বের করে দেখছে। আরো তদন্ত করে প্রকৃত ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ নির্ণয় করা হচ্ছে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই প্রতিষ্ঠানটি নিজেরা সিরাজ ব্রান্ডের সাইকেল পার্টস উৎপাদন করে। একইসঙ্গে তারা বিদেশ থেকে পূর্ণাঙ্গ সাইকেল আমদানি করে বাজারজাত করে থাকে।
সাইকেল ব্যবসায় উৎপাদনে ১৫ শতাংশ হারে এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ে ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য।