প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় লুৎফুন নাহার তন্বীর। এভাবে কথাবার্তা। তারপর সখ্য। এক পর্যায়ে দেখা করতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন সোহাগ নামে এক কলেজ ছাত্র। গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর মিরপুর-১-এ ঘটনা ঘটে।

অপহরণের ঘটনার সময় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। একইসঙ্গে চারজন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র নামে পরিচিত ডিএমপি নিউজ এ খবর জানিয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—লুৎফুন নাহার তন্বী, শফিকুল ইসলাম, মাসুদ রানা ও মো. স্বপন। গ্রেপ্তারের সময় অপহরণে ব্যবহৃত সিএনজি ও তিনটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়।

মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাজিরুর রহমানের বরাত দিয়ে ডিএমপি নিউজ জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নার্সিং কলেজের ছাত্র ভুক্তভোগী সোহাগের সঙ্গে লুৎফুন নাহার তন্বীর পরিচয় হয়। তন্বী নিজেকে মাস্টার্স পাস করা একজন অবিবাহিত তরুণী হিসেবে পরিচয় দেন। তারপর মুঠোফোনে তন্বীর সঙ্গে সোহাগের দীর্ঘদিন ধরে কথাবার্তা চলে।

গত সোমবার তন্বী সোহাগকে মোবাইলে মিরপুর-১ নম্বর ওভার ব্রিজের নিচে দেখা করতে বলেন। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় সোহাগ সেখানে আসার পর তাকে মিরপুর-১ নম্বরের হোটেল রোজ ভিউয়ের (আবাসিক) একটি রুমে নেওয়া হয়।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তন্বী হোটেলের কক্ষ থেকে ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে শফিকুল, মাসুদ ও স্বপনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এসএমএস পেয়ে শফিকুল, মাসুদ ও স্বপন হোটেলে এসে উপস্থিত হয়। শফিকুল নিজেকে সিআইডি কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীর মুঠোফোনটি ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে কৌশলে তন্বী ঘটনাস্থল থেকে সরে যায়।

ডিএমপির দাবি, পরে শফিকুল, মাসুদ ও স্বপন সোহাগকে সিআইডি অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালের সামনে থেকে একটি সিএনজি ভাড়া করে। অভিযুক্তরা সিএনজিতে সোহাগের হাত ও মুখ চেপে ধরে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেন। একইসঙ্গে দুই লাখ টাকা দাবি করেন।

সে সময় সোহাগের অভিযুক্তদের পুলিশ বলে সন্দেহ হলে টেকনিক্যাল মোড়ে পুলিশের গাড়ি দেখে চিৎকার করে। চিৎকার শুনে টহল পুলিশ সিএনজির পিছু ধাওয়া করে পাইকপাড়া ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে থেকে সিএনজিটিকে জব্দ করে। সে সময় সোহাগকে উদ্ধার ও তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্যমতে মিরপুর-১ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তন্বীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়।