ফরিদপুর সদর ও ভাঙ্গায় প্রথম চার করোনা রোগী শনাক্ত
ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও সদর উপজেলায় প্রথমবারের মতো আজ মঙ্গলবার চারজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দিকুর রহমান।
সিভিল সার্জন বলেন, ‘আজ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে (ফমেক) টেস্টের জন্য জেলার ৫০ জনের নমুনা পাঠানো হয়। এর মধ্যে ভাঙ্গা উপজেলার তিনজন ও সদর উপজেলার একজন শনাক্ত হয়েছেন।’
এর মধ্যে গতকাল রাতে ঢাকা পুলিশ হেডকোয়ার্টাস থেকে আসা কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের এক পুলিশ সদস্যের করোনা পজিটিভ হয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মহসিন মিয়া বলেন, গতকাল সোমবার জ্বর, মাথাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে উপজেলার দুজন এবং ভাঙ্গা পৌরসভা এলাকা থেকে একজন নার্স উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা নিতে আসেন। এ সময় সন্দেহ হলে তাদের সম্মতিতে শারীরিকভাবে নমুনা নিয়ে পরীক্ষার জন্য ফরিদপুরে পাঠানো হয়। আজ মঙ্গলবার পরীক্ষার ফলাফলে ওই তিন ব্যক্তির শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে।
ভাঙ্গার তিন করোনা রোগীর বয়স ২২, ৪০ ও ৪৩ বছর।
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রকিবুর রহমান খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ভাঙ্গায় এই প্রথম তিনজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। আমরা এখন পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে সিদ্ধান্ত নেব।’
অপরদিকে, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অবস্থিত পিসিআর ল্যাবের টেস্টে সদর উপজেলার একজন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তি একজন পুলিশ কনস্টেবল। তিনি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পদায়িত এবং গতকাল রাতে বাড়িতে আসেন।
এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুম রেজা বলেন, ‘আমরা এই সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। তাঁর বাড়িটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আমার মোবাইল নম্বরটি তাঁকে দেওয়া হয়েছে যাতে জরুরি হলে তিনি সরাসরি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এলাকার লোকজনকেও সতর্ক করা হয়েছে যাতে ওই ব্যক্তি থেকে আর কারো আক্রান্তের খবর পাওয়া না যায়।’
এদিকে এ নিয়ে জেলায় মোট ১২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলো।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আজ দুপুর পর্যন্ত পাঁচজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত ছাড়াও উপসর্গ নিয়ে সন্দেহভাজন আরো চারজন রোগী ভর্তি রয়েছেন। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে করোনারভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ল্যাব পিসিআর স্থাপনের পর গত ২০ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার ৭৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ২৩ জনের ফল পজিটিভ এসেছে।
ফমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক এস এম খবিরুল ইসলাম বলেন, গত আট দিনে ফরিদপুরের ৪১১ জনের এবং গোপালগঞ্জ জেলার ৩৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।