প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ‘স্বর্ণ কিশোরী’র ওপর হামলা
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ঘরের ভেতরে ঢুকে ঝালকাঠির ‘স্বর্ণ কিশোরী’ খেতাবপ্রাপ্ত কলেজছাত্রী নাছরিন আক্তার সারার (১৭) ওপর হামলা হয়েছে। বেসরকারি একটি টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান পরিচয়দানকারী জুবায়ের আদনান (২২) এ হামলা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে শহরের ফকিরবাড়ী সড়কে সারার বড় বোনের বাসায় অতর্কিত এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আহত সারাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সারা ঝালকাঠি আকলিমা মোয়াজ্জেম ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী।
অভিযোগে জানা যায়, ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের একটি মসজিদের ইমাম জাকির হোসেনের ছেলে বেসরকারি একটি টেলিভিশনের সাংবাদিকের ব্যক্তিগত ক্যামেরাম্যান জুবায়ের আদনান বেশ কিছুদিন ধরে নাছরিন আক্তার সারাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। সারা প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে আদনান তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হন। প্রায়ই পথেঘাটে তাঁকে উত্ত্যক্ত করা শুরু করেন আদনান। আজ দুপুর ১টার দিকে জুবায়ের আদনান ফকিরবাড়ী সড়কে সারার বড় বোন আখিনূরের ভাড়া করা বাসার দরজায় নক করেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে আদনান সারার ওপর হামলা চালান। মারধরের একপর্যায়ে সারা জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আদনান পালিয়ে যান। খবর পেয়ে বড়বোন ও প্রতিবেশীরা সারাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝালকাঠি সদর থানায় নিয়ে আসে। সেখান থেকে তাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সারা বলে, ‘আমার বড় বোনের দুটি সন্তান রয়েছে। বোন চাকরি করার সুবাদে আমি তাদের বাসায় থেকে বাচ্চাদের লালন-পালন করি। পড়ালেখার পাশাপশি ঝালকাঠিতে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছি। বাল্যবিবাহ বন্ধ করে আমি স্বর্ণ কিশোরী হিসেবে পুরস্কার পেয়েছি। আমাকে জুবায়ের আদনান অনেক আগে থেকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। আমি তাঁকে বলেছি, যদি পারেন আমার বাসায় গিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু তা না করে তিনি আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতে চান। আমি এতে রাজি না হওয়ায় তিনি ঘরের ভেতরে ঢুকে গলা চেপে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেন। আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন।’
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার বলেন, ‘সারা বিষয়টি আমাকে ফোনে জানিয়েছে। আমি তাকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আমরা তাকে সহযোগিতা করব।’
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মো. হাসিবুর রহমান অয়ন বলেন, ‘মেয়েটির গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
ঝালকাঠি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওসি স্যারের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’