প্রেমিকাকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে যুবক আটক
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ফোন করে ডেকে নিয়ে দুই সহযোগীসহ প্রেমিকাকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আমিরুল ইসলাম (২৮) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আমিরুলের বাড়ি ভৈরব শহরের গাছতলাঘাট এলাকায়। গুরুতর আহত মেয়েটি বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। তার বাড়ি শহরের পঞ্চবটী এলাকায়।
ভুক্তভোগীর মায়ের অভিযোগের বরাতে পুলিশ জানায়, আমিরুল জরুরি কথা আছে বলে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মেয়েটিকে গাছতলাঘাট এলাকার একটি নির্জন বাড়িতে ডেকে নেয়। সেখানে যাওয়ার পর আমিরুল তার দুই সহযোগী সবুজ ও শরীফকে নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা চেলায়। মেয়েটি কৌশলে সেখান থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করলে আমিরুল পেছন থেকে জাপটে ধরে ব্লেড কিংবা ধারালো কিছু দিয়ে গলায় আঘাত করে। এতে মেয়েটি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আমিরুলসহ অন্য দুই সহযোগী পালিয়ে যায়।
পরে মেয়েটির চিৎকারে স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে পুলিশে খবর দিলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন ভুক্তভোগীর স্বজনরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আমিরুলসহ অন্য দুই সহযোগীর নামে অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে আমিরুলকে গ্রেপ্তার করে।
ভুক্তভোগী মেয়েটির মা জানান, লোকজনের মুখে খবর পেয়ে গাছতলাঘাট যান তিনি। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, তার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে পুলিশ। হাসপাতালে এসে দেখেন মেয়ের চিকিৎসা চলছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. কে এন এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মেয়েটিকে পুলিশ সদস্যরা হাসপাতাল আনেন। তার গলায় কাটা দাগ ছিল এবং সে কথা বলতে পারছিল না। তাকে আমরা অজ্ঞান অবস্থায় ভর্তি করি। তখন তার গলায় চার ইঞ্চি লম্বা কাটা দাগ দেখতে পাই এবং সেখানে প্রায় ১০টি সেলাই করি। পরে সন্ধ্যায় তার জ্ঞান ফিরে এলে সে আমাদের জানায়, একটি ছেলে তাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ব্লেড বা কিছু একটা দিয়ে তাকে আঘাত করেছিল।’
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে লোক মারফত এক তরুণী গাছতলাঘাট এলাকায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে জেনে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সন্ধ্যায় তার জ্ঞান ফিরে এলে সে জানায়, প্রেমিক আমিরুল ও তার সহযোগী চাচা সবুজ ও বন্ধু শরীফ তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ব্যর্থ হয়ে আমিরুল ধারালো ব্লেড দিয়ে গলা কেটে হত্যা করতে চায়। এ অভিযোগে রাতে ওর মা একটি অভিযোগ দায়ের করলে আমরা আমিরুলকে গ্রেপ্তার করি।’