প্রবাসীর পাঠানো ল্যাপটপ নিয়ে উধাও, শেষ রক্ষা হলো না মাসুদের
রাজধানীর খিলগাঁও থেকে আলাউদ্দিন মাহি নামের এক ব্যক্তি বাংলাদেশ পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের ইনবক্সে জানান, ওমান থেকে তাঁর এক ভাগনি-জামাই ওমানফেরত অপর এক বাংলাদেশি মাসুদ পারভেজ রাজার মাধ্যমে একটি দামি ল্যাপটপ তাঁর জন্য দেশে পাঠান।
কথা ছিল- দেশে ফেরার দিন এয়ারপোর্ট থেকে আলাউদ্দিন মাহি নিজেই ল্যাপটপটি সংগ্রহ করবেন। কিন্তু মাসুদ পারভেজ এয়ারপোর্টে নেমে আলাউদ্দিন মাহি বা ল্যাপটপ প্রেরণকারীর সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
এরপর রাজা ও তাঁর ভাইয়ের মোবাইলে বার বার ফোন দিলে তাঁরা আলাউদ্দিন মাহিকে নানাভাবে ঘোরাতে থাকে, অস্বীকার করে ল্যাপটপের কথা।
একপর্যায়ে এক বন্ধুর পরামর্শে এ বিষয়টি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং-এর নজরে আনেন আলাউদ্দিন। তাঁর বার্তা পাওয়ার পরপরই এ বিষয়ে প্রাথমিক কিছু তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে মিডিয়া উইং। পুলিশ জানতে পারে, মাসুদ পারভেজ রাজার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা থানার অধীন। অভিযুক্তের নাম ঠিকানাসহ বার্তাটি ভেড়ামারা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালালকে পাঠিয়ে দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলে মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং।
এর পরিপ্রেক্ষিতে, ভেড়ামারা থানার ওসি তাৎক্ষণিক উপপরিদর্শক দীপন কুমার ঘোষের নেতৃত্বে ভেড়ামারা থানা পুলিশের একটি দল অভিযুক্তের বাড়িতে পাঠান।
পুলিশকে মাসুদ পারভেজ রাজার বাড়িতে যেতে হয়েছে একাধিকবার। পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে প্রথমে মাসুদ পারভেজ রাজার দেশে ফেরার কথা অস্বীকার করে তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। পরবর্তী সময়ে তাদের দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে মাসুদ পারভেজের অবস্থান শনাক্ত করা হয়।
আলাউদ্দিন মাহির করা অভিযোগের ভিত্তিতে মাসুদ পারভেজ রাজাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এরপর রাজার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে ল্যাপটপটি উদ্ধার করা হয়।
ল্যাপটপটি তার যোগ্য প্রাপক আলাউদ্দিন মাহিকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত মাসুদ পারভেজ রাজার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা বাংলাদেশ পুলিশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানান।
পোস্টে বলা হয়, ল্যাপটপটি বুঝে পেয়ে আলাউদ্দিন মাহি লিখেছেন, ‘মাত্র ১০ দিনের মধ্যে পুলিশ অপরাধীদের খুঁজে বের করে আমার ল্যাপটপটি উদ্ধার করে দিয়েছে, যা আমাদের অভিভূত করেছে। আমি খুবই আনন্দের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং-এর আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমি এই ল্যাপটপটি ফিরে পেয়েছি। এজন্য আমি ভেড়ামারা থানাসহ বাংলাদেশ পুলিশের সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং বাংলাদেশ পুলিশের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।’