প্রথম আলো সম্পাদকের ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন
ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর ঘটনায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হকসহ পাঁচজনকে অভিযোগপত্র আমলে না নেওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন। আজ সোমবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ জামিন শুনানিতে প্রথম আলোর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির।
এর আগে গতকাল রোববার হাইকোর্টে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আরজি জানান প্রথম আলো সম্পাদকসহ ছয়জন। বিকলে সাড়ে ৩টায় আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে। অপর পাঁচজন হলেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক, কিশোর আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান তুষার ও নির্বাহী শুভাশীষ প্রামাণিক। এ ছাড়া কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জসীম উদ্দিন, মোশাররফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হাওলাদার জামিনের আবেদন করেননি। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানির জন্য আজ দিন নির্ধারণ করে দিয়ে আসামিদের এই সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করার জন্য নির্দেশ দেন।
গত বছরের ১ নভেম্বর ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্যাম্পাসে প্রথম আলোর সহযোগী প্রকাশনা ‘কিশোর আলো’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান হয়। ওই অনুষ্ঠানের জন্য টানা বিদ্যুৎ-সংযোগে স্পৃষ্ট হয় শিক্ষার্থী নাইমুল আবরার রাহাত। পরে মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর ৬ নভেম্বর নাইমুল আবরারের বাবা মজিবুর রহমান বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন। আদালত সেদিন নালিশি মামলাটি আমলে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে শিক্ষার্থী নাইমুল আবরারের মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়।
গত ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল আলীম মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ‘কিশোর আলো’র প্রকাশক ও প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ‘কিশোর আলো’র সম্পাদক আনিসুল হকসহ ১০ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জারির আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দেন। যাঁদের নামে পরোয়ানা দেওয়ার আদেশ হয়, তাঁরা হলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক, কিশোর আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান তুষার ও নির্বাহী শুভাশীষ প্রামাণিক, ডেকোরেশন ও জেনারেটর সরবরাহকারী জসীম উদ্দিন, মোশাররফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হাওলাদার।