প্রথম আলোর সম্পাদক, সহযোগী সম্পাদকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর ঘটনায় দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলামের আদালত সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি শেষে মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো.ওমর ফারুক আসিফ। এ সময় নাইমুল আবরারের বাবা মজিবুর রহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে প্রথম আলোর পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।
আইনজীবী ওমর ফারুক আসিফ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, গত ১ নভেম্বরের ঘটনায় ৬ নভেম্বর শিক্ষার্থী নাইমুল আবরার রাহাতের বাবা বাদী হয়ে অবেহলাজনিত কারণে মৃত্যু, দণ্ডবিধির ৩০৪ এর ‘ক’ ধারায় আদালতে একটি নালিশী মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের জন্য আদালত নির্দেশ দিলে আজ পুলিশ প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে আদালত প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
দণ্ডবিধির ৩০৪ ‘ক’ ধারায় বলা হয়, ‘অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যু’ : “কোন ব্যক্তি বেপরোয়াভাবে বা অবহেলাজনকভাবে কার্য করে কারো মৃত্যু ঘটায় এবং তা শাস্তিযোগ্য নরহত্যা না হয়, তবে সে ব্যক্তি পাঁচ বৎসর পর্যন্ত মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে, অথবা অর্থদণ্ডে অথবা উভয়বিধ দণ্ডেই দণ্ডিত হবে।”
মামলার যাঁদের নামে পরোয়ানা দেওয়ার আদেশ হয়েছে, তাঁরা হলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক, হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শুভাশীষ প্রামাণিক, নির্বাহী শাহ পরাণ তুষার, কিশোর আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক মহিতুল আলম, ডেকোরেশন ও জেনারেটর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের জসীম উদ্দিন, মোশাররফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হাওলাদার।
গত ১ নভেম্বর ঢাকা রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজে ক্যাম্পাসে প্রথম আলোর সহযোগী ‘কিশোর আলো’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান হয়। ওই অনুষ্ঠানের জন্য টানা বিদ্যুৎ-সংযোগে স্পৃষ্ট হন শিক্ষার্থী নাইমুল আবরার রাহাত। পরে মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর ৬ নভেম্বর নাইমুল আবরারের বাবা মজিবুর রহমান বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মোহাম্মদপুর থানাকে নির্দেশ দেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে নির্দেশে শিক্ষার্থী নাইমুল আবরারের মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়।
আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আলীম মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ১০ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জারির আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দেন।
‘কিশোর আলো’র প্রকাশক মতিউর রহমান এবং সম্পাদক আনিসুল হক।