প্রতিবেশী ও বন্ধুদের চোখে ওসি সালাহউদ্দিন
হলি আর্টিজান হামলায় নিহত বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন খান (লুই) ছাত্রজীবনে মেধাবী, ধর্মভীরু ও বন্ধুবৎসল ছিলেন। তিনি ভালো ক্রিকেট খেলতেন। মানুষের উপকারে এগিয়ে আসতেন। ছোটবেলা থেকেই তাঁর মধ্যে মানবিক ও নেতৃত্বের গুণাবলির প্রকাশ ঘটে।
পুলিশে যোগ দিয়েই সালাহউদ্দিন পরিবারের হাল ধরেন। পরিবারের সদস্যদের কাছে পরিণত হন নির্ভরতার প্রতীকে। পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন; এলাকার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া অঙ্গনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সালাহউদ্দিন সম্পর্কে এসব তথ্য জানা যায়।
২০১৬ সালের জুলাই রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে প্রাণ হারান সালাহউদ্দিন খান। তাঁকে হারিয়ে পরিবারটি এখন দিশেহারা।
গোপালগঞ্জ শহরের ব্যাংকপাড়ার স্কুলশিক্ষক আবদুল মান্নান খানের ছেলে সালাহউদ্দিন খান। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠেন। শহরের এস এম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে এসএসসি ও ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৯০ সালে যোগ দেন পুলিশ বাহিনীতে। দায়িত্ব পালন করেন দেশের গুরুত্বপূর্ণ অনেক থানায়।
পুলিশ কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন খানের প্রতিবেশী খোন্দকার এহিয়া খালেদ বলেন, ‘সালাহউদ্দিন লুই আমার একেবারেই প্রতিবেশী। আমার শিক্ষক মান্নান স্যারের ছেলে। খেলাধুলা, সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে সে খুবই তৎপর ছিল। মানুষের সাহায্য-সহযোগিতায় এগিয়ে আসত। মানবিক হৃদয়ের অধিকারী ছিল সে।’
বনানী থানার সাবেক ওসি সালাহউদ্দিন খান লুইয়ের বন্ধু ও প্রতিবেশী হাবিবুর রহমান প্রবাল বলেন, ‘ছাত্র অবস্থায় খুব ভালো ছিল। কেউ বলতে পারবে না যে লুই একটা খারাপ ছেলে। খুব নম্রভাষী ছিল, আলাপ-আলোচনায় কখনো জোরে কথা বলেনি। খুবই মানবিক হৃদয়ের অধিকারী ছিল।’
সালাহউদ্দিন খানের ভাই রাজিউদ্দিন খান রাজু বলেন, ‘আমার ছোট ভাই সালাহউদ্দিন ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী ছিল, খেলাধুলায়ও খুব ভালো ছিল।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সালাহউদ্দিনের আরেক ভাই মোহাম্মদ আলী খান বলেন, ‘আমার ভাই সালাহউদ্দিন সেদিন নিরপরাধ মানুষের জীবন বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।’