পুলিশে করোনায় আক্রান্ত ১১০৭৩, মারা গেছেন ৪৫
প্রতিদিন বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হচ্ছেন। মারাও যাচ্ছেন। আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারা দেশে ১১ হাজার ৭৩ জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৪৫ জন সদস্য।
তবে পুলিশে আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরছেন সদস্যরা। এখন পর্যন্ত ছয় হাজার ৯৬৮ জন পুলিশ সদস্য চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরাদের মধ্যে বেশিরভাগই কাজে যোগদান করেছেন। পুলিশ সদর দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু ঢাকা মহানগর পুলিশেই (ডিএমপি) দুই হাজার ৩০৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে কনস্টেবল হতে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ মোট ২১৮ জন সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মারা যাওয়ার খবর তখনো পাওয়া যায়নি। প্রথম মারা যাওয়ার খবরটি আসে ২৮ এপ্রিল। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) জসিম উদ্দিন (৪০) নামের এক কনস্টেবল মারা যান সেদিন।
প্রথমদিকে পুলিশ সদস্যরা করোনায় কম আক্রান্ত হলেও সেই সংখ্যা এখন হু হু করে বাড়ছে। ২৩ এপ্রিল থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১৫৭ জন পুলিশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এখনো সেই ধারা চলছে। একদিনে সর্বোচ্চ ৩২৪ জন পুলিশ আক্রান্ত হয়েছিল। গত ২৬ জুন পর্যন্ত সারা দেশে নয় হাজার ৮৬৯ জন পুলিশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা যাওয়ার সংখ্যা তখন ৩৭ জন ছিল। কিন্তু পরের পাঁচ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ২০৪ জন।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া আর পিআর) সোহেল রানা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, পুলিশ বাহিনীকে উন্নত দেশের উপযোগী আধুনিক ও জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে কাজ করছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
আইজিপি বলেছেন, ‘দেশে করোনা সংক্রমণের প্রথম দিন থেকেই কোন ধরনের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য অপেক্ষা না করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যগণ জনগণের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে অনেক পুলিশ সদস্য নিজের অজান্তেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। জীবন দিয়েছেন ৪৫ জন সম্মুখযোদ্ধা পুলিশ সদস্য।’
আইজিপি বলেন, ‘আমরা করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে মাত্র দুই সপ্তাহে ২৫০ থেকে ৫০০ বেডের কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় ঢাকায় আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা সম্পন্ন একটি হাসপাতাল ভাড়া করা হয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য মাত্র ১২ দিনে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালেও কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের মতো একই প্রটোকলে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। এর ফলে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন, তাদের মৃত্যুর হার কমছে।’