পুলিশের মারধরে কৃষকের মৃত্যুর ঘটনায় এএসআইসহ গ্রেপ্তার দুই
গোপালগঞ্জে পুলিশের পিটুনিতে কৃষক নিখিল তালুকদারের (৩২) মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনায় অবশেষে কোটালীপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। নিখিলের ভাই মন্টু তালুকদার বাদী হয়ে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মামলাটি করেন। মামলায় কোটালীপাড়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শামীম হাসান ও তাঁর সহযোগী কোটালীপাড়া পৌর এলাকার কয়খাঁ গ্রামের রেজাউলকে আসামি করা হয়েছে।
কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ লুৎফর রহমান জানান, হত্যা মামলাটি গতকাল রোববার রাতে রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সোমবার তাঁদের আদালতে হাজির করা হবে।
কৃষক নিখিল তালুকদার কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল গ্রামের নীলকান্ত তালুকদারের ছেলে।
মামলার বাদী মন্টু তালুকদার জানান, গত ২ জুন মঙ্গলবার বিকেলে রামশীল বাজারের ব্রিজের পূর্ব পাশে নিখিলসহ চারজন সময় কাটাতে তাস খেলছিলেন। এ সময় কোটালীপাড়া থানার এএসআই শামীম হাসান এক ভ্যানচালক ও রেজাউল নামের এক যুবককে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। ওই সময় গোপনে মুঠোফোনে তাস খেলার দৃশ্য ধারণ করেন তিনি। নিখিলসহ অন্যরা বিষয়টি টের পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে দৌড়ে পালনোর চেষ্টা করেন। এ সময় অন্য তিনজন পালিয়ে গেলেও নিখিলকে ধরে মারধর করেন এএসআই শামীম। এক পর্যায়ে হাঁটু দিয়ে নিখিলের পিঠে আঘাত করেন শামীম। এ কাজে তাঁকে সহায়তা করেন রেজাউল। এতে নিখিলের মেরুদণ্ড ভেঙে যায়।
পরে নিখিলকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩ জুন বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মৃত্যু হয় নিখিলের। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে নিখিলের মরদেহ রামশীল গ্রামে দাহ করা হয়।
এরপরই গত শুক্রবার এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় শুরু হয়। ওইদিন জেলা পুলিশ তিন সদস্যের বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে নামেন পুলিশ কর্মকর্তারা। গত শনিবার অভিযুক্ত এএসআই শামীম হাসানকে কোটালীপাড়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে নেওয়া হয়।