পুনর্বাসন কেন্দ্রে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরল কলেজছাত্র
কুষ্টিয়ায় একটি মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ওই কলেজছাত্র হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে প্রতিষ্ঠানটির সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় ওই কলেজছাত্রকে পেটানো হচ্ছে। একই সঙ্গে শরীরে দেওয়া হচ্ছে ইনজেকশন।
নিহত কলেজছাত্রের নাম কামরুজ্জামান ইমন(১৮)। তিনি রাজশাহী সিটি কলেজের ছাত্র ছিলেন। সমর্পণ মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ইমনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ফুটেজ ভাইরাল হলে আজ বুধবার বিকেলে স্থানীয় প্রশাসন অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিক আব্দুল মতিন ও তত্ত্বাবধায়ক হাবিব উদ্দিনকে আটক করে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে সেখানে চিকিৎসাধীন অন্য রোগীদের তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নিহত ইমন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের কাদেরপুল গ্রামের এজাজুল আজীমের ছেলে।
নিহত ইমনের বাবা এজাজুল আজীম জানান, প্রায় মাসখানেক আগে ইমনের মাথায় সমস্যা দেখা দিলে গত ১৯ নভেম্বর দুপুরে ইমনকে ভর্তি করা হয় সমর্পণ মাদকাসক্তি মানসিক চিকিৎসা সহায়তা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে। পরের দিন ২০ নভেম্বর সকালে ওই কেন্দ্র থেকে জানানো হয় ইমনকে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে ইমনের মা-বাবা ও আত্মীয়রা গিয়ে দেখতে পান ইমন আর বেঁচে নেই। পরে ইমনের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়।
তবে ইমনের মৃত্যু যে স্বাভাবিক নয়, তাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে। ক্যামেরায় পরিষ্কার দেখা যায়, মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে বেশ কয়েকজন ইমনকে হাত-পা বেঁধে মারধর করছে। শরীরে পুশ করা হচ্ছে ইনজেকশন।
ইমনের মা কামরুন্নাহারের অভিযোগ, ইমনকে নির্যাতন করেই হত্যা করা হয়েছে। ইমনের এমন নির্মম মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দাবি করে পরিবারের সদস্যরাসহ এলাকাবাসী।
ওই মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে গিয়ে মালিকপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে ইমনকে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত রুবেল নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘উশৃঙ্খলতা ঠেকাতে হাত-পা বেঁধে চড় থাপ্পড় মারা হয় ইমনকে।’
কেন্দ্রের গ্রেপ্তার হওয়া তত্ত্বাবধায়ক হাবিব উদ্দিন জানান, নির্যাতনে নয়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ইমন।