পাবনা-৪ আসনে উপনির্বাচন : ভোটারের উপস্থিতি কম ছিল
অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের মধ্যে দিয়ে আজ শনিবার পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব ভোটের কোনো পরিবেশ নেই উল্লেখ করে আজ দুপুরে গ্রামের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে ভোট বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই সরকার নির্লজ্জভাবে ভোট করছে। কোনো রকম ভোটের পরিবেশ নেই। ভোটের আগের দিন আমাদের নেতাকর্মীদের নামে তিনটি মামলা করে এলাকাছাড়া করা হয়েছে। ১২৯টির কোনো কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্ট দিতে দেওয়া হয়নি। এখানে কোনো নির্বাচনই হয়নি। এ কারণে এই নির্বাচন বাতিল চেয়ে পুনর্নির্বাচন দাবি করছি।’
এদিকে, দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ‘বিএনপির প্রার্থী হাবিবুর রহমান ভোট করতে নয়, ভোট বাণিজ্য করতে প্রার্থী হয়েছিলেন।’
আজ সকাল ১০টায় ঈশ্বরদীর কালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে মোট ২৪৫৭ ভোটের মধ্যে সকাল ১০টার দিকে ভোট পড়েছিল ৩০টি।
প্রিসাইডিং অফিসার মনোজিৎ কুমার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ভোটারের উপস্থিতি ছিল কম। তবে কোনো অঘটন নেই।
সাহাপুর শহীদ আবুল কাশেম উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করে দেখা যায়, সেখানে মোট ৩৪৮৮ ভোটের মধ্যে বেলা ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৪৩২টি। এই কেন্দ্রের ভোটার বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব।
এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমি এই কেন্দ্রে বিএনপির কোনো পোলিং এজেন্টের সন্ধান পাইনি। ১০টি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেও দেখা যায় ভোটারদের উপস্থিতি খুব কম এবং প্রতিটি কেন্দ্রে বিএনপির কোনো পোলিং এজেন্ট নেই। তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর একাধিক পোলিং এজেন্ট সব কেন্দ্রে দেখা গেছে।’
বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন পাবনা প্রেসক্লাবে এক সাংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনের জন্য নয়, ব্যবসার জন্য নির্বাচনে আসে। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার বা নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করার তাদের কোনো লক্ষ্য নেই, তাই আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে হাবিব মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। বিএনপি নির্বাচনকে গুরুত্ব সহকারে নেয়নি, তাদের নেতারা দাবি করেছেন যে, তারা আন্দোলনের অংশ এবং আনুষ্ঠনিকতার জন্য নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তারা কোনো জায়গায় নির্বাচনী মাঠে কাজ করেনি। কেবল মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মোশারোফ হোসেন, পৌর মেয়র কামরুল হাসান মিন্টু, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রিয় নেতা কামরুজ্জামান উজ্জ্বল, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলী মতুর্জা বিশ্বাস সনিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নেতারা।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন এবং দুটি পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৮১ হাজার ১১২ জন।
পাবনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ শেখ বলেন, ‘সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে একটানা বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।’