পাঁচ বছরেও সংস্কার হয়নি কিশোরগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি
কিশোরগঞ্জ শহরের নীলগঞ্জ চৌরাস্তা মোড় থেকে কানিকাটা রেলক্রসিং পর্যন্ত আধা কিলোমিটারেরও কম দূরত্বের এই সড়কটি। এর পাশেই কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বাসভবন। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দিয়ে মেয়র ও কাউন্সিলরা চলাচল করলেও সড়কটির সংস্কার হয়নি গত পাঁচ বছরেও। এর ফলে সড়কটির শতাধিক স্থানে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রথমে মার্চ মাসে দরপত্র আহ্বান করা হলেও করোনার কারণে তা মে মাস পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। মে মাসের টেন্ডারে মাত্র একজন ঠিকাদার অংশ নেয়। ওই ঠিকাদারের কাগজপত্রসহ প্রয়োজনীয় যোগ্যতার ঘাটতি থাকায় তা বাতিল করে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের জন্য ঢাকায় প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখনো চিঠির উত্তর পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষের সম্মতি পাওয়ামাত্রই আবার দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া নেওয়া হবে।’
তবে চলতি বছরেই সড়কটির সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে কিনা এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলতে পারেননি ওই প্রকৌশলী।
সময়মতো সংস্কার কার্যক্রম না হওয়ায় চলতি বর্ষা মৌসুমে সড়কটি চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। দুইজন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি এখানকার বাসিন্দা হলেও গত পাঁচ বছরে সড়কটির সংস্কার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা আব্দুল আলী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে আমার বাসভবনে যেতে হলেও আমি কখনোই পায়ে হাঁটা ছাড়া যানবাহনে চলাচল করি না। কারণ আমার হৃদযন্ত্রে সমস্যা থাকায় ভাঙা সড়কের কারণে প্রবল ঝাঁকুনিতে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বাধ্য হয়ে আমি অন্য সড়ক হয়ে ঘুরপথে বাসায় ফিরি। গর্ভবতী নারীদের জন্যও এই সড়ক ব্যবহার করা খুব বিপদজনক। অবিলম্বে সড়কটি সংস্কার করা উচিৎ।’
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা সংগীতশিল্পী মুজিবুর রহমান জানান, সড়কটির যাচ্ছেতাই বেহাল অবস্থা হওয়ায় চলাচল করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। মেয়র সাহেবকে বারবার বলার পরও শুধু আশ্বাস ছাড়া সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেননি।’
সাংবাদিক ফাইজুল হক গোলাপ বলেন, ‘মেয়র-কাউন্সিলররা যে কীভাবে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করেন মাথায় আসে না। এই ভাঙাচোরা সড়কের কারণে মানুষের চলাচলে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মেয়র সাহেবকে এ ব্যাপারে বলেও কাজ হয়নি।’
করোনায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থতার পর বিশ্রামে থাকায় মেয়র মাহমুদ পারভেজের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে মেয়রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল মেয়র ইসমাইল হোসেন ইদু জানান, জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত প্রক্রিয়া শেষ করে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে।
ওই এলাকার বাসিন্দা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজিজুল ইসলাম রবিন জানান, প্রক্রিয়া শেষ হলেই দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করা হবে।