পর্যটকদের কক্সবাজার ছাড়ার নির্দেশ
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সব পর্যটককে দ্রুত কক্সবাজার ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। একইসঙ্গে সমুদ্র সৈকতে কোনো পর্যটক যেন না নামতে পারে সে ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশ এরইমধ্যে ওই সিদ্ধান্তের কথা কক্সবাজারের সব হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা যায়। একইসঙ্গে যেসব পর্যটক হোটেলে অবস্থান করছেন তাঁদেরও দ্রুত কক্সবাজার ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ঠিক এই সময়ে শিক্ষার্থীদের কক্সবাজারে বেড়াতে যাওয়া নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে আজ বুধবার বিজ্ঞপ্তি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘করোনাভাইরাসের আতঙ্কের কারণে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাচ্ছে ঘুরতে। অনেকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ভ্রমণেও গেছেন।’
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোনো শিক্ষার্থীকে রাস্তায় ঘুরতে দেখলে তাদের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন জানিয়েছেন, কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক আসে। এর ফলে কক্সবাজার করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছে বেশি। তাই ঝুঁকি এড়াতে কক্সবাজারে পর্যটকদের আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সমুদ্রসৈকতে জনসমাগমরোধে পর্যটকদের না নামতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সৈকতের বিচকর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ সমুদ্রসৈকত থেকে পর্যটকদের সরিয়ে নিচ্ছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সমুদ্রসৈকত থেকে পর্যটকদের বুঝিয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের নামতে দেওয়া হবে না।
জেলা প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্তের পর থেকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। বিকেল ৪টা থেকে সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে মাইকিংয়ের মাধ্যমে পর্যটকদের সরে যেতে বলা হচ্ছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান ওই তথ্য জানিয়েছেন।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, কক্সবাজার জেলায় কোথাও এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি পাওয়া যায়নি। তবে তিনজন বিদেশ ফেরত ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
করোনাভাইরাস নিয়ে কক্সবাজারের বাসিন্দাদের বিভ্রান্ত এবং আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সিভিল সার্জন। তিনি বলেছেন, ‘সর্তক থাকতে হবে।’
এদিকে হোটলে-মোটেলসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে জনসমাবেশ, বিনোদন অনুষ্ঠান পরিবেশনসহ সবধরনের জনসমাগমের আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ শেষে এ কথা বলেন মাসুদুর রহমান মোল্লা। আজ সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা, কলাতলীর ডলফিন মোড়ে ছোট-বড় যানবাহনসহ বিভিন্ন স্থানে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণে নেতৃত্ব দেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. মাসুদুর রহমান মোল্লা।
ওই সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আমিন আল পারভেজ, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।