নেত্রকোনায় টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে জমি
টানা বর্ষণ ও খালে অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণে নেত্রকোনা সদর উপজেলার মৌগাতী ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রামের কমপক্ষে এক হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। খালের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে পুকুর তৈরি করে মাছ চাষ করায় পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে জমিতে পানি জমে ফসল নষ্ট হওয়ায় আতংকে রয়েছে চাষিরা।
জেলায় অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে কয়েক দফা বন্যার কারণে এবার এমনিতেই কয়েকটি উপজেলায় কৃষকদের আমন আবাদ করতে দেরি হয়। বন্যার পানি কিছুটা কমলে দেরিতে জমি চাষ দিয়ে চড়া দামে ধানের চারা কিনে তা রোপণ করে কৃষকরা। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে জামাটি গ্রামের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি খালের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে পুকুর তৈরি করছে মাছ চাষ করছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে পানি নিষ্কাশনের পথ। এ কারণে সদর উপজেলার মৌগাতী ইউনিয়নের জামাটি, নাটেরকোনা, আসনউড়া, টিকুরী, বাদে সুবুন্দিয়া, সুবুন্দিয়াসহ প্রায় ১০টি গ্রামের কমপক্ষে এক হাজার হেক্টর আমন ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এজন্য ফসলহানির ভয়ে রয়েছে কৃষকরা।
কৃষক কামাল উদ্দিন জানান, এলাকার বেশির ভাগ ফসলি জমি পানির নিচে। বাকি জমিও তলিয়ে যাওয়ার পথে। জামাটি গ্রামের খালের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে ছোট ছোট পুকুর তৈরি করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে বাড়িঘর।
ওই গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক খোকন মিয়া বলেন, ‘আমাদের গ্রামের খালটি বন্ধ থাকায় নদীতে পানি নামতে পারছে না। এতে এলাকার বোরো ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’
মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মতিন খান বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৫০০ একর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। খালে বাঁধ দিয়ে পুকুর তৈরি করায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ রয়েছে। এতে নদীতে পানি নামতে পারছে না। আমাদের গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের আমন ফসলি জমি এখনো পানির নিচে। খালটি দখলমুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।’
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাবিনা ইয়াসমিন জানান, বিষয়টি জেনে তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে আসায় ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তায় পরবর্তীতে প্রণোদনার ব্যবস্থাসহ খালের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে ছোট ছোট পুকুর তৈরি করার বিষয়টি পানি কমার পর যথাযত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।