নেত্রকোনায় ঝড়ে তিন শতাধিক কাঁচাঘর বিধ্বস্ত, আহত ২০
ঈদের সকালে নামাজের প্রস্তুতিকালে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ে তিন শতাধিক কাঁচা ও আধাপাকা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় শিশু ও নারীসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। আজ সোমবার সকালে প্রায় ১০ মিনিট স্থায়ী ঝড়ে বোরো ফসলসহ গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আহতদের মধ্যে মল্লিকপুর গ্রামের মৃত জয়নাব আলীর স্ত্রী (৬৫) ও একই গ্রামের স্বপন মিয়ার পাঁচ বছরের শিশু ছেলে কাইয়ুমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আটপাড়া উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়রা জানায়, আজ সকালে হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। প্রায় ১০ মিনিট স্থায়ী এই ঝড়ে উপজেলার শুনই ইউনিয়নের গোয়াতলা, বরতলি, মুনসুরপুর, নারায়ণপুর, বানিয়াজান ইউনিয়নের আটিকান্দা, লুনেশ্বর ইউনিয়নের মল্লিকপুর, দেওগাঁও, পোখলগাঁও, অভয়পাশা, সীতারামপুর, পাহাড়পুর, স্বমুশিয়াসহ অন্তত ২৫টি গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক কাঁচা-আধাপাকা ঘর বিধ্বস্ত হয় এবং অনেক গাছপালা উপড়ে ও ভেঙে পড়ে। একইসঙ্গে পল্লীবিদ্যুতের বেশ কিছু তারের ওপর গাছের ডালপালা পড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন সড়কে গাছ পড়ে থাকায় ওই সব সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঝড়ে বোরো ফসল ও আম কাঁঠালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
আটপাড়া ডিগ্রি কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক ও পুখলগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মো. মনিরুজ্জামান বাবুল বলেন, ‘সকালে ঈদের নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় হঠাৎ প্রচণ্ড বেগে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। প্রায় ১০ মিনিট স্থায়ী ঝড়ে উপজেলার ২৫টি গ্রামে তিন শতাধিক ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। আহত হয়েছে ২০ জনের মতো। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত লুনেশ্বর, স্বমুশিয়া, বানিয়াজান ও শুনই ইউনিয়ন। এ ছাড়া উপজেলার অন্য তিনটি ইউনিয়নেও আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
আটপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘ঝড়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে এক শিশু ও একজন বৃদ্ধ নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা নিচ্ছে। ঝড়ে ঘরবাড়ির পাশাপাশি উঠতি বোরো ফসল ও ফলন্ত আম-কাঁঠাল গাছেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়ায় নেত্রকোনা-আটপাড়া সড়কসহ বেশকিছু গ্রামীণ রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। বেশ কিছু বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিভিন্ন গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়সহ এসব বিষয় সমাধানে কাজ চলছে।’
আটপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা সুলতানা বলেন, ‘ঝড়ে কয়েকজন আহত ও বেশ কিছু এলাকায় ঘরবাড়িসহ গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ বিবরণ এখনো পাওয়া যায়নি। এ বিষয় তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। উপজেলায় এর আগে গত ১৫ মে দুপুরে ঝড়ে দুই শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়।’