নির্বাচনে হানাহানি কাম্য নয়, তবে সব দেশেই হয় : প্রধানমন্ত্রী
চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রাণহানীর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই হানাহানির সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘এটা শুধু এ দেশে নয় আমেরিকা, যুক্তরাজ্যসহ সব দেশে আছে।’
আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে যুক্ত হন। অপরদিকে সংবাদকর্মীরা যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হল থেকে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালে বিএনপির সময়ে দেশে সংহিংসতা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। ওই সময়ে নারীদের নির্যাতন, বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন ছিল ভয়াবহ। বর্তমানে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যানের প্রতীক দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মেম্বারদের দলীয় প্রতীক নেই। তবে নির্বাচনে হানাহানি কাম্য নয়। আমার দলের বিদ্রোহী ক্যান্ডিডেট আছে। যারা দলের মধ্যে হানাহানি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আর যারা বাইরে বসে উসকে দিচ্ছে বা মারামারি করছে তাদের বিরুদ্ধে কী করার আছে!’
‘এটা শুধু এ দেশে নয় আমেরিকা, যুক্তরাজ্যসহ সব দেশে আছে’- উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘ব্রিটেনে ৩৫ বছর ধরে একজন এমপি, তাঁকে ছুরির আঘাতে মেরে ফেলা হলো। আমেরিকা-যুক্তরাজ্যসহ এসব দেশে ঘটনাগুলোর বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো কোনো বক্তব্য নেই। আমেরিকা বিশাল দেশ। সে দেশের একটি প্রদেশের সমান আমাদের ভূখণ্ড। কিন্তু আমাদের দেশে অনেক মানুষ বসবাস করে। এ জনবসতি হিসেবে বাংলাদেশে কিছু ঘটনা ঘটে চলেছে। আমরা চেষ্টা করছি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। কিন্তু কিছু ঘটলেও ব্যবস্থার পদক্ষেপের সঙ্গে মিলিয়ে রাখলে এটি খুবই নগণ্য।’
এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘সংসদ সদস্য ও দলীয় প্রার্থীদের আয়-ব্যয় দল থেকে হিসাব নেওয়া হচ্ছে না। তবে আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনের কাছে দেওয়া হচ্ছে এবং প্রকাশও করা হচ্ছে। যেহেতু একজনের কাছে দেওয়া হচ্ছে। তাই দল থেকে নেওয়া হচ্ছে না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো, লন্ডন ও প্যারিসে দুই সপ্তাহের সরকারি সফর শেষে গত রোববার দেশে ফেরেন। এর আগে গত ৩১ অক্টোবর দুই সপ্তাহের সফরে স্কটল্যান্ডের বন্দরনগরী গ্লাসগো পৌঁছান তিনি।
গ্লাসগোতে প্রধানমন্ত্রী কপ২৬ জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এরপর ৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীরা লন্ডনের উদ্দেশে গ্লাসগো ত্যাগ করেন।
৯ নভেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীরা প্যারিসের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ইউনেস্কো সদর দপ্তরে ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর দ্য ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’র পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান’, ইউনেস্কোর ৪১তম সাধারণ সম্মেলন, প্যারিস শান্তি ফোরাম এবং ইউনেস্কোর ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।