নির্দিষ্ট দিনে টিকা নেননি, আজ এসে প্রবাসীদের বিক্ষোভ
করোনাভাইরাসের টিকা নিতে না পেরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কেন্দ্রে বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসীরা। আজ শনিবার সকালের দিকে হাসপাতালের বহির্বিভাগ টিকাকেন্দ্রের সামনে এ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তাঁরা।
তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, বিক্ষোভকারীদের অনেকের আগে টিকার নেওয়ার তারিখ ছিল। সেই তারিখে তারা আসেননি। এ ছাড়া এখন কেন্দ্রে শুধু সিনোফার্মের টিকার বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু অনেক প্রবাসীর মডার্না, অ্যাস্ট্রেজেনেকা বা ফাইজারের টিকা দরকার। সেটা না থাকলে তো দেওয়া যাবে না।
বিক্ষুব্ধ প্রবাসীদের অভিযোগ, টিকাপ্রত্যাশী অনেকেই রাজধানীর বাইরে এমনকি দূরের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকায় আসেন। অনেকে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় ওঠেন। সেখান থেকে ভোরে টিকাকেন্দ্রে যান। কিন্তু ঢামেকের টিকাকেন্দ্রে কর্মরতরা জানান, আজ তাদের টিকা দেওয়া হবে না। এরপর কবে যে টিকা দেওয়া হবে তা-ও নির্দিষ্ট করে বলতে পারেন না। এখন টিকা নিতে না পারলে আবার নতুন করে গ্রাম থেকে আসতে হবে তাদের। এ কারণে টিকার দাবিতে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টিকা নিতে না পেরে ঢাকা মেডিকেলের বহির্বিভাগে বিক্ষোভ শুরু করেন প্রবাসীরা। পরে হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের সীমানার বাইরে বের করে দেন। এরপর তারা পাশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক কর্মকর্তা তাদের ‘তিন দিনের মধ্যে টিকার ব্যবস্থা করে দেবেন’- মর্মে আশ্বস্ত করলে তারা ফিরে যান।
টিকাপ্রত্যাশী প্রবাসীরা জানান, তাদের অধিকাংশের ভিসার মেয়াদ চলে যাচ্ছে। সবাই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক। সবাই এজেন্সিতে টাকা দিয়ে রেখেছেন। কর্তৃপক্ষ আশ্বস্তও করতে পারছে না, কবে টিকা পেতে পারবেন। তাদের দাবি, যেন দ্রুত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
ঢামেক হাসপাতালে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কোনো প্রবাসীকেই আজ প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার জন্য টিকা দেইনি। আজ যারা এসেছেন তাদের আগের তারিখে টিকা নেওয়ার দিন ছিল। তখন তারা বিভিন্ন কারণে আসতে পারেননি, এখন তারা এসে টিকা নিতে চাচ্ছেন।’
নাজমুল হক আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে প্রথম ডোজ সিনোফার্মের আছে, তাদের সিনোফার্মের টিকা নিতে অফার করেছি। বলেছি, আমাদের এখানে সিনোফার্ম চলছে, আপনারা এটা নিতে পারেন। কিছু প্রবাসী যাদের সিনোফার্মা নিলেও চলে, যেমন- থাইল্যান্ড, ওমানপ্রবাসী, তারা সিনোফার্মা নিচ্ছে। আর যাদের অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার ও মডার্না না নিলে চলবে না তাদের আমরা বলেছি, আপনারা খবর রাখেন, যখন সরকার এগুলো চালু করবে তখন আপনারা আসবেন।’
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, সকালে টিকা নিতে না পারা প্রবাসীরা কিছুটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল। পরে তাদের বুঝিয়ে টিকাকেন্দ্র থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন হাসপাতালের পরিবেশ স্বাভাবিক।