নিজের ভাষার যথাযথ মর্যাদা দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
অন্য ভাষা জানার প্রয়োজন আছে, কিন্তু নিজের ভাষার যথাযথ মর্যাদা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় এ বছর ১০টি ক্যাটাগরিতে ২০ গুণীজন ও একটি প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তির হাতে একুশে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চারজন পেয়েছেন মরণোত্তর একুশে পদক। এ বছর ভাষা আন্দোলন, সমাজসেবা, অভিনয়, সংগীত, নৃত্য, সাংবাদিকতা, ভাষা ও সাহিত্যসহ ১০টি বিভাগে এই পদক দেওয়া হয়। আর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গবেষণায় এই পদক পেয়েছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট। মরণোত্তর পদক যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয় মর্যাদাপূর্ণ এই সম্মাননা।
পরে রাখা বক্তব্যে বাংলা ভাষার বিকাশে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। সবাইকে বাংলা ভাষার স্বকীয়তা বজায় রাখারও আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করা। একুশ শিখিয়েছে আত্মমর্যাদাবোধ। একুশের এই রক্ত অক্ষরে লিখে রাখা হয়েছিল আগামী দিনের আমাদের স্বাধীনতা। কাজেই আমাদের জন্য এই দিনটি অত্যন্ত গৌরবের। আমরা চাই যে এই গৌরবের ইতিহাস আমাদের দেশের প্রজন্মের পর প্রজন্ম মানুষ জানবে। জীবন-জীবিকার জন্য অন্য ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা আছে। কিন্তু তাই বলে নিজের ভাষাকে ভুলে যাওয়া বা নিজের ভাষা বিস্মৃত হওয়া এটা আমাদের জন্য মোটেই ঠিক নয়।’
একুশে পদক পেলেন যাঁরা
এবার একুশে পদক পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন—ভাষা আন্দোলনে মরহুম আমিনুল ইসলাম বাদশা (মরণোত্তর), শিল্পকলায় (সংগীত) ডালিয়া নওশিন, শঙ্কর রায় ও মিতা হক, শিল্পকলায় (নৃত্য) মো. গোলাম মোস্তফা খান, শিল্পকলায় (অভিনয়) এম এম মহসীন, শিল্পকলায় (চারুকলা) অধ্যাপক শিল্পী ড. ফরিদা জামান, মুক্তিযুদ্ধে মরহুম হাজি আক্তার সরদার (মরণোত্তর), মরহুম আবদুল জব্বার (মরণোত্তর), মরহুম ডা. আ আ ম মেসবাহুল হক (বাচ্চু ডাক্তার) (মরণোত্তর), সাংবাদিকতায় জাফর ওয়াজেদ (আলী ওয়াজেদ জাফর), গবেষণায় ড. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ কারি আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ ছাইফুর রহমান নিজামী শাহ, শিক্ষায় অধ্যাপক ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, অর্থনীতিতে অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, সমাজসেবায় সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, ভাষা ও সাহিত্যে ড. নুরুন নবী, মরহুম সিকদার আমিনুল হক (মরণোত্তর) ও নাজমুন নেসা পিয়ারি এবং চিকিৎসায় অধ্যাপক ডা. সায়েবা আখতার। পাশাপাশি ‘গবেষণা’য় একুশে পদক পেয়েছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট।
ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে সরকার প্রতিবছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দিয়ে আসছে।
পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, পুরস্কারের অর্থ ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।