ধান মজুদের নতুন বিধি-নিষেধ চালকল শিল্পের সংকট ডেকে আনবে
ধান মজুদের ক্ষেত্রে সরকার নতুন যে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে এতে করে অটোমেটিক বা স্বয়ংক্রিয় চালকল শিল্প চরম সংকটের মধ্যে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন ধান্য-চাউল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা চন্দন।
গতকাল রোববার রাতে দেশের স্বয়ংক্রিয় চালকলের সংকট ও সমাধানে নওগাঁয় বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের মিল-মালিকদের মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন নিরোদ বরণ সাহা চন্দন।
নওগাঁ শহরের একটি হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খোরশেদ আলম।
সভায় ধান্য-চাউল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, ‘খাদ্যপণ্য মজুদের নতুন বিধিমালা অনুযায়ী একটি মিলে পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতার তিনগুণ ধান ৩০ দিন মজুদ রাখা যাবে। আগের নীতিমালা অনুযায়ী একটি মিলে পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতার পাঁচগুণ ধান মজুদ ৩০ দিন রাখা যেত। নতুন বিধি নিষেধের ফলে অটো চালকলগুলো কম ধান মজুদ রাখার নিয়ম মেনে চললে সারা বছর এসব মিল চালানো সম্ভব হবে না। কারণ বোরো ও আমন মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে বেশি ধান মজুদ না করতে পারলে বছরে তিন থেকে চার মাস অটো মিলগুলো বন্ধ রাখতে হবে। এতে অটো মিলের যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়বে।’
নিরোদ বরণ সাহা চন্দন আরো বলেন, ‘চালকল শিল্প সংকটে পড়লে সরকার আমদানি নির্ভর হয়ে পড়বে। ধান মজুদের নতুন বিধি-নিষেধ এরই মধ্যে গেজেট হয়ে গেলেও সরকারের সঙ্গে দেন দরবার করে এই নীতি সংশোধনে ব্যবসায়ীদের তৎপরতা চালাতে হবে।’
বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে দেন দরবারে চালকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অটো, মেজর ও হাস্কিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতারা এত দিন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে এসেছেন। যার ফলে সরকার একের পর এক নীতিমালা চাপিয়ে দিয়ে এই শিল্পকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পেরেছে। এই পরিস্থিতি উত্তরণে এবং অটো রাইস মিলগুলোকে বাঁচানোর জন্য চাল ব্যবসায়ীদের সবার সমন্বয়ে এমন একটি নেতৃত্ব নির্বাচন করতে হবে, যাতে ওই নেতারা সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দেন দরবার করে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন নওগাঁর মেসার্স সোনালী অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী মাহবুবুল হক কমল। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বেলকন গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল হোসেন, নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাবেক সভাপতি তৌফিকুল ইসলাম, বিশিষ্ট চাল ব্যবসায়ী আব্দুল গাফফার চৌধুরী, দ্বিজেনাথ ঘোষ প্রমুখ।