ধর্ষণচেষ্টার সময় হত্যা, নারীর যাবজ্জীবন
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায় ধর্ষণচেষ্টার সময় ইমাম হাফেজ মো. মিজানুর রহমান খোকনকে হত্যার দায়ে এক নারীকে যাবজ্জীবন ও তাঁর ভাইকে সাত বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া ময়না আক্তারকে (২৯) দুই লাখ টাকা ও তাঁর ভাই মনির হোসেনকে (২৫) ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ময়না আক্তার কুলিয়ারচরের উছমানপুর ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের বিলপাড়ার দুবাইপ্রবাসী নজরুল ইসলামের স্ত্রী। অন্যদিকে নিহত ইমাম হাফেজ মো. মিজানুর রহমান খোকন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের পূর্ব ভরাটি গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে। তিনি কুলিয়ারচরের উছমানপুর ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের বিলপাড়া পাঞ্জেগানা মসজিদের ইমাম ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৪ আগস্ট রাতে স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে ময়না আক্তারের ঘরে ঢুকে মিজানুর রহমান খোকন ওই নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি মিজানকে বাধা দেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ময়না আক্তার খাটে মশারি টানানোর রশি দিয়ে মিজানের গলা পেঁচিয়ে সজোরে টানতে থাকেন। এতে মিজানের মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর রাত ৩টার দিকে কোনাপাড়া এলাকায় এক ব্যক্তি ভারি একটি বস্তা নিয়ে যাওয়ার সময় বিষয়টি এলাকার কয়েকজনের নজরে আসে। তারা চোর ভেবে চিৎকার শুরু করলে ওই ব্যক্তি বস্তাটি ফেলে পালিয়ে যায়। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আরেক ব্যক্তিও মোটরসাইকেল ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে দেখা যায়, বস্তার ভেতরে ইমাম মিজানুর রহমান খোকনের লাশ।
এ ঘটনায় ১৫ আগস্ট রাতে নিহতের বড় ভাই মো. নূরুল হক বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে কুলিয়ারচর থানায় মামলা করেন। পুলিশ এই মামলায় ময়না আক্তার ও তাঁর ভাই মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। ১৬ আগস্ট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ময়না আক্তার। ইজ্জত বাঁচাতে ইমাম মিজানুর রহমান খোকনকে খুন করেছেন বলে ময়না আক্তার তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুলিয়ারচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কোহিনূর মিয়া ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল ময়না আক্তার ও তাঁর ভাই মনির হোসেনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট যজ্ঞেশ্বর রায় চৌধুরী ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুল কুদ্দুস মামলা পরিচালনা করেন।